HomeBharatPoliticsবেহাল বাংলা থেকে তিন মাসে সরল ২০৭ বেসরকারি সংস্থা

বেহাল বাংলা থেকে তিন মাসে সরল ২০৭ বেসরকারি সংস্থা

- Advertisement -

কলকাতা ৩ ডিসেম্বর: পশ্চিমবঙ্গের শিল্প পরিবেশ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল সংসদে (Companies Leaving West Bengal)। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাত্র তিন মাসে রাজ্য ছেড়ে চলে গিয়েছে ২০৭টি বেসরকারি সংস্থা। এই তালিকায় রয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত একাধিক সংস্থাও। সংখ্যাটি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র দোষারোপ, পাল্টা যুক্তির পালা।

রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য তথ্য দিয়ে জনিয়েছেন ২০১১ সাল থেকে ২০২৪-এর জুলাই পর্যন্ত মোট ৬,৬৮৮টি সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্যত্র সরে গিয়েছে। এবার তিনি একই ইস্যুতে ভয়ঙ্কর তথ্য দিয়ে জানান গত তিন মাসে আরও ২০৭টি সংস্থা বাংলা থেকে সরে গিয়েছে। 

   

রায়পুরে অর্ধশতরানে করে এই নজির কোহলি-গায়কোয়াড জুটির!

মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই ২০৭টি সংস্থার মধ্যে রয়েছে ৪৪৮টি স্টক এক্সচেঞ্জ নথিভুক্ত সংস্থার মধ্যে বেশ কয়েকটি। যদিও এই সংস্থাগুলি ঠিক কোন কোন কারণে রাজ্য ছেড়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি, কিন্তু শিল্পমহলে অনেকে বলছেন পরিকাঠামো, শিল্পভূমি, প্রশাসনিক জটিলতা, এবং প্রতিকূল বিনিয়োগ-পরিবেশই এর বড় কারণ।

শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মাত্র তিন মাসে ২০০-র বেশি সংস্থার চলে যাওয়া প্রমাণ করছে রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি ভয়ংকর পর্যায়ে। কাজের অভাবে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্য ছাড়ছেন, এ তথ্য সেই বাস্তবকেই দেখাচ্ছে।” বিজেপির দাবি, এই পরিসংখ্যান ‘কাগজে-কলমে’ নয়, বরং শিল্পহীনতার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে। কেন্দ্র থেকে নিয়মিত যা তথ্য আসছে, তা বাংলার বেহাল অবস্থাকে তুলে ধরছে।

তবে পাল্টা সুর তৃণমূলের। দলীয় সাংসদ বাপি হালদার সংসদে বলেন, “বিজেপি তথ্য বিকৃত করছে। একই মন্ত্রক গত অগস্টে জানিয়েছিল গত ১৪ বছরে পশ্চিমবঙ্গে নথিভুক্ত সংস্থার সংখ্যা ১.৭ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে আড়াই লক্ষ। এটাই প্রকৃত সত্য। বিজেপির মিথ্যা প্রচার লোকসভায় ফাঁস হয়ে গেছে।” তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি যত সংস্থা বন্ধ হয়েছে, তার থেকেও বেশি নতুন সংস্থা খোলা হচ্ছে। তাই বিজেপির উত্থাপিত তথ্য দৃষ্টিভঙ্গিকেন্দ্রিক, প্রকৃত পরিস্থিতি নয়।

তবে শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের মতে, সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে কর্মসংস্থানের মান বা বাণিজ্যিক কার্যক্রমের গভীরতা কমছে। শুধু কাগজে কোম্পানি খোলা মানে শিল্পের উন্নতি নয়। প্রকৃত শিল্প-বিনিয়োগ, উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ও চাকরির সংখ্যা দিয়ে শিল্প পরিবেশ বিচার করা উচিত। রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা, জমি সংক্রান্ত সমস্যা, ব্যবসায়িক অনুমতির জটিলতা ও করনীতির বিভ্রান্তি সব মিলিয়েই একাধিক সংস্থা অন্য রাজ্যে তাদের কার্যক্রম সরিয়ে নিচ্ছে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।

রাজ্যের রাজনৈতিক মহল এখন দু’ভাগে বিভক্ত তৃণমূল বলছে উন্নতি হয়েছে, বিজেপি বলছে শিল্পভাঙন চলছে। কিন্তু শিল্পমহলের মতে, পরিসংখ্যানে যেমন অগ্রগতির আভাস আছে, তেমনই আছে বাস্তব সংকটের ছাপ। ফলে আগামী দিনে গুরুতর শিল্প-নীতির পুনর্বিবেচনা দরকার না হলে আরও সংস্থা ‘বঙ্গ-ত্যাগে’ বাধ্য হবে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular