পটনা: শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে জল্পনার ইতি। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিহারের নতুন সরকারের দফতর বণ্টনের ঘোষণা করা হলো। আর সেখানেই সবচেয়ে বড় খবর দীর্ঘদিন ধরে নিজের হাতেই রাখা শক্তিশালী স্বরাষ্ট্র দফতর এবার ছেড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। নয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন তাঁরই ডেপুটি ও বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরী। এই পরিবর্তনকে বিহারের রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সপথ গ্রহণের আগে থেকেই জল্পনা ছড়িয়েছিল স্বরাষ্ট্র দফতর নিয়ে জেডিইউ ও বিজেপির মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। এমনকি NDA জোটের আলোচনাও নাকি সাময়িক জটের মুখে পড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নীতীশ কুমার সমঝোতার পথে হেঁটেই দফতর বণ্টনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলেন। জেডিইউ সূত্রের মতে, জোটে স্থায়িত্ব বজায় রাখতেই নীতীশ এই রাজনৈতিক বার্তা দিতে চান।
iQOO 15-এর দাম ফাঁস! কোন ভ্যারিয়েন্ট আপনার বাজেটে? সবটা জানুন
বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীর হাতে স্বরাষ্ট্র দফতর চলে যাওয়াকে বিজেপির জন্য রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর এটিই। সম্রাট চৌধুরীর ওপর তাই এখনই কার্যত সরকারের অর্ধেক দায়িত্ব এসে পড়ল।
দ্বিতীয় উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা পেয়েছেন ভূমি ও রাজস্ব দপ্তর, পাশাপাশি খনি ও ভূতত্ত্ব দফতরও তাঁর তত্ত্বাবধানে। বর্ষীয়ান নেতা মঙ্গল পাণ্ডে আবার ফিরলেন স্বাস্থ্য দফতর , সঙ্গে আইন দফতরের দায়িত্বও পেলেন।
নীতীশ সরকারের অর্থনৈতিক নীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে শিল্প দফতরের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে দিলীপ জয়সওয়ালকে। এবার রাস্তা ও নগরোন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নীতিন নবীনকে অর্থাৎ পরিকাঠামো উন্নয়নের দুই গুরুত্বপূর্ণ দফতর একই সঙ্গে সামলাতে হবে তাঁকে। কৃষি খাতের দায়িত্ব পেয়েছেন রামকৃপাল যাদব, আর শ্রম সম্পদ দফতরের দায়িত্ব গেছে সঞ্জয় টাইগারের হাতে।
পর্যটন দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন অরুণ শঙ্কর প্রসাদ সঙ্গে সংস্কৃতি ও যুব বিষয়ক দফতরও। প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য দপ্তর দেখবেন সুরেন্দ্র মেহতা, আর বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের দায়িত্ব পেয়েছেন নারায়ণ প্রসাদ। সামাজিক ন্যায়বিচারের দিকটি আরও স্পষ্ট করে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নয়ন দফতর দেওয়া হয়েছে রামা নিশাদকে।
তফসিলি জাতি ও উপজাতি কল্যাণ দফতর পেয়েছেন লখেদের পাসওয়ান। সবশেষে উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব পেয়েছেন শ্যেয়াসী সিংহ তথ্যপ্রযুক্তি ও ক্রীড়া উভয় দপ্তরের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। আর প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ও পরিবেশ–জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তর দেওয়া হয়েছে প্রমোদ চন্দ্রবানশীকে।
দফতর বণ্টনের এই তালিকা প্রকাশের পর রাজনৈতিক পরিবেশ স্পষ্ট NDA জোটে আপাত শান্তি ফিরলেও সরকারের ভিতরে ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপনই এখন বড় পরীক্ষা। বিরোধীদের দাবি, নীতীশ কুমার এবার এমন প্রশাসনিক ব্যবস্থা তৈরি করলেন যেখানে রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ কার্যত বিজেপির হাতে সরছে। তবে জেডিইউ বলছে, স্থায়ী সরকার গড়াই মুখ্যমন্ত্রীর অগ্রাধিকার, দপ্তর বণ্টন তারই অংশ।


