নয়াদিল্লি: আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Assembly Polls) আগে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্যের সমস্ত প্রধান রাজনৈতিক দল একযোগে দাবি জানিয়েছে, চছট উৎসবের পরপরই যেন ভোটগ্রহণের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। শনিবার নির্বাচন কমিশনের (ECI) সঙ্গে বৈঠকে বিজেপি, কংগ্রেস, জনতা দল (ইউনাইটেড), রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) সহ সব জাতীয় ও আঞ্চলিক দল জানায়, ভোটার ও প্রার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত জরুরি।
নির্বাচন কমিশন বর্তমানে দুই দিনের বিহার সফরে রয়েছে এবং প্রথম দিনেই তারা রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় বসে। বৈঠকে বিভিন্ন দল ভোটের ধাপ যতটা সম্ভব কম করার প্রস্তাবও রাখে। দলগুলির মতে, একাধিক ধাপে ভোট হলে প্রচারের সময়সীমা বেড়ে যায়, প্রশাসনিক চাপ বাড়ে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াও দীর্ঘায়িত হয়।
কমিশনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত ৬ অক্টোবরের পরেই নির্বাচন সূচি ঘোষণা করা হবে। সফরের দ্বিতীয় দিনে কমিশন রাজ্যের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করবে এবং একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবে।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে গণতন্ত্রের “ভিত্তি” বলে আখ্যা দেয় এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়। কমিশন জানায়, ভোট ও গণনার সময় উপযুক্ত এজেন্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে ভোটারদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক উৎসবের আবহে নির্বাচন পালনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক দলগুলিও কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রশংসা করে। এর মধ্যে রয়েছে — প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সর্বাধিক ১,২০০ জন ভোটার রাখার সীমা, ডাক ভোট (postal ballot) যেন ইভিএম গণনার শেষ রাউন্ডের আগেই গোনা হয়, এবং প্রেসাইডিং অফিসাররা যেন ভোটগ্রহণ শেষে ফর্ম ১৭সি পার্টি এজেন্টদের হাতে তুলে দেন, যাতে ভোটার উপস্থিতির তথ্য দ্রুত ও নির্ভুলভাবে জানা যায়।
সব দলই নির্বাচন কমিশনের উপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, তারা বিশ্বাস করে কমিশন সম্পূর্ণ অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৩০ সেপ্টেম্বর কমিশন বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনার (SIR) পর দেখা গেছে, মোট ৭.৪২ কোটি ভোটার এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, চছট উৎসবের পর ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে ভোটারদের অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলিও আরও পরিকল্পিতভাবে প্রচার চালাতে পারবে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও সুশৃঙ্খল করে তুলবে।
এখন সবার নজর নির্বাচন কমিশনের দিকে — কবে তারা ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ ঘোষণা করে এবং কয়টি পর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব দলই ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে এবং চছট উৎসবের পর ভোটের আবহ আরও গরম হবে বলেই অনুমান বিশ্লেষকদের।