পহেলগাঁও থেকে দিল্লি বিস্ফোরণ! চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি POK প্রধানের

pok-leader-anwarul-haq-delhi-blast-confession-2025

ইসলামাবাদ ১৯ নভেম্বর: পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী (POK leader) আনওয়ারুল হক আজ তাঁর সংসদীয় বক্তৃতায় এমন এক স্বীকারোক্তি করেছেন যা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য নতুন বিষম পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, “আমরা বলেছিলাম, যদি তোমরা বেলুচিস্তানকে রক্তাক্ত করতে থাকো, তাহলে আমরা লাল কেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল পর্যন্ত ভারতকে আঘাত করব।

Advertisements

আল্লাহর কৃপায় আমরা তা করে ফেলেছি, আর তারা এখনও লাশের সংখ্যা গোনা শেষ করতে পারেনি।” এই কথাগুলো একটি ভিডিওতে রেকর্ড হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে, যা ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে তুলেছে।চৌধুরী আনওয়ারুল হক, যিনি ২০২৩ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে প্রভাবশালী।

   

পুলিশের সামনেই প্রধানশিক্ষক শামসুল হোডা মাসুমকে পিটুনি

তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন POK আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের আইনসভায়। তাঁর কথায় ‘লাল কেল্লা’ বলতে ইঙ্গিত করা হয়েছে দিল্লির লাল কেল্লার কাছে গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের দিকে, যাতে কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং যা ভারতীয় তদন্তকারীরা পাকিস্তান-সমর্থিত জৈশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম)-এর সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছে। আর ‘কাশ্মীরের জঙ্গল’ বলতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এপ্রিল মাসে টুরিস্টদের উপর হামলা, যাতে ২৬ জন নিহত হয়েছিল।

হকের এই ‘প্রতিশোধের গৌরব’ ভারতকে ‘বেলুচিস্তানে কথিত ভূ-করণীয়তার’ জবাব হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের অভিযোগের অংশ। POK আইনসভায় হকের বক্তব্য শুনে সদস্যরা হাততালি দিয়েছিলেন, কিন্তু এটি ভারতে পৌঁছতেই রাজনৈতিক ঝড় উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সকালের সভায় বলেছেন, “পাকিস্তানের এই স্বীকারোক্তি তাদের সন্ত্রাসবাদী মানসিকতার প্রমাণ।

আমরা শান্তি চাই, কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করব।” বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “এটা কেবল হামলার গল্প নয়, এটা আমাদের সীমান্তের সৈনিকদের রক্তের অপমান। সরকারকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

Advertisements

এই ঘটনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার সঙ্গে জড়িত। বেলুচিস্তানে সাম্প্রতিক বোমা হামলায় পাকিস্তানি সেনা ও নাগরিকরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে, যা ইসলামাবাদ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা আরএসডব্লিউ-এর কাজ বলে অভিযোগ করে আসছে।

কিন্তু হকের মতো নেতারা এটাকে ‘প্রতিশোধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এক পাকিস্তানি সাংবাদিক, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “হকের এই কথা পোয়েকে-তে জনপ্রিয়তা বাড়াবে, কিন্তু এটা আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে আরও বিচ্ছিন্ন করবে। চীনও এখন চুপ নয়, কারণ সি-পেক প্রকল্প বেলুচিস্তান দিয়ে যায়।”

ভারতে এই স্বীকারোক্তির প্রভাব ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরে সুরক্ষা বাহিনী হাই অ্যালার্টে, দিল্লিতে লাল কেল্লা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন। গতকাল ফরিদাবাদে একটি সন্ত্রাসবাদী মডিউল ধরা পড়েছে, যা জেএম-এর সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) বলেছে, “এই হামলাগুলো পাকিস্তানি আইএসআই-এর নির্দেশে হয়েছে। হকের কথা তার প্রমাণ।” আন্তর্জাতিকভাবে আমেরিকা এবং ব্রিটেন এই ভিডিওর নিন্দা করেছে।