গুজরাট: শনিবার গুজরাটের ভবনগরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) দেশের আত্মনির্ভরতার গুরুত্ব নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “ভারতের কোনো বড় শত্রু নেই। দেশের একমাত্র প্রকৃত শত্রু হল বিদেশের ওপর নির্ভরতা। আমাদের এই শত্রুকে একসাথে পরাস্ত করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বক্তৃতা দিয়েছেন এমন সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করেছেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মার্কিন কোম্পানিগুলিকে প্রতি বছর প্রতি বিদেশি কর্মীর জন্য $১,০০,০০০ ফি দিতে হবে। মোদি এই প্রেক্ষাপটে ভারতের আত্মনির্ভরতার গুরুত্ব আরও বেশি করুণ।
মোদীর ভাষায়, “একজন ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষবহুল দেশের জন্য আত্মনির্ভর হওয়া অপরিহার্য। বিদেশি নির্ভরতা যত বেশি, দেশের ব্যর্থতা তত বেশি।” তিনি আরও বলেন, আত্মনির্ভরতা দেশের শান্তি, স্থিতি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
তিনি উদাহরণ দেন INS Vikrant-এর, যা সম্পূর্ণ ভারতীয় ইস্পাত দিয়ে নির্মিত। তিনি জানান, দেশের ৪০টিরও বেশি জাহাজ ও সাবমেরিন ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে, যার অধিকাংশই ভারতেই তৈরি। মোদী এই উদাহরণের মাধ্যমে দেশীয় শিল্প ও প্রযুক্তির সক্ষমতা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র সরকার শীঘ্রই ‘One Nation, One Document’ এবং ‘One Nation, One Port Process’ নীতি চালু করতে চলেছে। এর ফলে ভারতীয় বন্দর ব্যবস্থায় নতুন সংস্কার আসবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর হবে। তিনি বলেন, “ভারতের বন্দর দেশের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং বৈশ্বিক সামুদ্রিক শক্তি হিসেবে গড়ে তুলছে।”
মোদীর বক্তব্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় দেশের শিপিং খাতে বিদেশি নির্ভরতা কমানোর উপর। তিনি বলেন, “ভারত প্রতিবছর প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশি সংস্থার হাতে পণ্য পরিবহনের জন্য দেয়, যা দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটের সমান। দেশের শিপিং শক্তি বৃদ্ধি করে এই অর্থ দেশে রাখা সম্ভব।”
মোদী বলেন, ভারতকে এমন শিল্পায়ন করতে হবে যেখানে ক্ষুদ্র চিপ থেকে বড় শিপ সবকিছুই দেশীয়ভাবে উৎপাদিত হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের বন্দর ও সামুদ্রিক খাতকে শক্তিশালী করা দেশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “লাইসেন্স রাজের সময় ভারতীয় প্রতিভাকে দমিয়ে রাখা হয়েছিল। আজ দেশ তার ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে চলেছে।”
সবশেষে মোদী জোর দিয়ে বলেন, “ভারতের ভবিষ্যৎ আত্মনির্ভরতার মধ্য দিয়ে। আত্মনির্ভর ভারতই দেশের উত্থানের চাবিকাঠি।”