কংগ্রেসের প্রতি আক্রমণ তীব্রতর করতে গিয়ে, বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) অভিযোগ করেছেন যে, কংগ্রেস সবসময় ভারতের জাতির জনক বাবাসাহেব ড. বি আর আম্বেদকরের অবদান উপেক্ষা করে এবং এক পরিবারের নামকেই সবকিছুর কৃতিত্ব দিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্যগুলি করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের কেন-বেতোয়া নদী সংযোগ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে।
এবার মণিপুর সীমান্তে পা বাড়াল আরাকান সেনা! উদ্বেগে দিল্লি
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘ড. বি আর আম্বেদকরের অবদান দেশের ইতিহাসে অমূল্য। তবে কংগ্রেস সব সময় তাকে উপেক্ষা করে, এবং একমাত্র একটি পরিবারের নামকেই সবকিছুর জন্য কৃতিত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের জাতির পিতার নাম যদি এক পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, তবে আম্বেদকরের মতো নেতা, যিনি ভারতের সমাজ সংস্কার এবং সংবিধানের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তার অবদান কেন গুরুত্ব পাবে না?’’
এই মন্তব্যগুলি এমন একটি সময় এসেছে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আম্বেদকরের বিষয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যা কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে। অমিত শাহ আম্বেদকরের প্রতি সম্মান জানিয়েও, কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, যা কংগ্রেসের নেতারা চ্যালেঞ্জ করেছেন।
আমেরিকায় জয়শঙ্কর, মোদীর বার্তা পৌঁছতে ট্রাম্প-সাক্ষাতের সম্ভাবনা
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেসের প্রতি এই আক্রমণ তীব্র করতে গিয়ে আরও বলেন, ‘‘যতই তারা চেষ্টা করুক না কেন, ভারতীয় সমাজের উন্নতি এবং সমানাধিকারের জন্য আম্বেদকরের ভূমিকা কখনও অস্বীকার করা যাবে না।’’
এছাড়া, কংগ্রেস এবং বিরোধীরা একযোগভাবে অমিত শাহের মন্তব্যকে ‘অসঙ্গত’ এবং ‘অবমাননাকর’ বলে অভিহিত করেছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, অমিত শাহের মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু আম্বেদকরের অবমাননা করা হয়নি, বরং দেশের এক মহান নেতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে।
আরাকানদের দখলে বার্মিজ জুন্টার নৌঘাঁটি, রেঙ্গুনের পতন সময়ের অপেক্ষা
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মোদীর এই আক্রমণের মধ্যে আরও একটি রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে, কারণ এই মুহূর্তে ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে আম্বেদকর এবং তাঁর সমাজ-সংস্কারক ভূমিকা। মোদী সরকারের পক্ষে এমন আক্রমণ কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশলের প্রতি এক প্রকার চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদী সরকারের এই আক্রমণ শুধু কংগ্রেসকে আক্রমণ করা নয়, বরং এক বৃহত্তর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও পূর্ণ করছে। তারা মনে করছেন, এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বার্তা পৌঁছানো হচ্ছে যে, মোদী সরকার তাদের নেতাদের প্রতি সম্মান জানাতে সদা প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেসকে তার পুরনো কর্মকাণ্ড এবং নীতির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর মাধ্যমে ভারতের রাজনৈতিক চিত্রে আরও একটি নতুন উত্তাপ যোগ করলেন।