চলতি মাসেই সেনা প্রধানের সঙ্গে কলকাতায় মোদী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বার্ষিক কমান্ডার্স কনফারেন্সের উদ্বোধন করবেন। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মেলনটি দেশের প্রতিরক্ষা কৌশল, জাতীয় নিরাপত্তা…

PM Modi in kolkata

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বার্ষিক কমান্ডার্স কনফারেন্সের উদ্বোধন করবেন। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মেলনটি দেশের প্রতিরক্ষা কৌশল, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ।

কলকাতার ঐতিহাসিক ফোর্ট উইলিয়ামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যা ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দফতর। এই সম্মেলনে তিন বাহিনী—সেনা, নৌসেনা এবং বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

   

কমান্ডার্স কনফারেন্স ভারতের সামরিক নীতি ও কৌশল নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সম্মেলনে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, সাইবার নিরাপত্তা, এবং সীমান্তে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

বিশেষ করে, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে চলমান উত্তেজনা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয় এই সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই সম্মেলনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি এবং আধুনিকীকরণের উপর জোর দিয়ে তাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়ে বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কলকাতায় এই সম্মেলনের আয়োজন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং চীন ও বাংলাদেশের সীমান্তের নৈকট্যের কারণে, এই অঞ্চল জাতীয় নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর এই সম্মেলনের আয়োজন আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সমন্বয় এই সম্মেলনের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্মেলনের পাশাপাশি কলকাতায় কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন, যার মধ্যে মেট্রো রেল সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর প্রকল্প রয়েছে।

এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও ভবিষ্যৎমুখী করা। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ভারত সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার উপর জোর দিয়েছে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানের অংশ হিসেবে, দেশীয় প্রযুক্তি ও অস্ত্র উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এই সম্মেলনে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ড্রোন প্রযুক্তি এবং সাইবার যুদ্ধের ক্ষেত্রে ভারতের প্রস্তুতি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

Advertisements

প্রধানমন্ত্রী মোদী তার নেতৃত্বে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিশ্বমানের করে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর। তিনি বারবার বলেছেন যে, একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মেরুদণ্ড। এই সম্মেলনে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তাদের প্রশিক্ষণ, কল্যাণ এবং কৌশলগত প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করবেন।

এছাড়াও, তিনি সম্ভবত সীমান্ত অঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়ন, যেমন রাস্তা, সেতু এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে নতুন ঘোষণা করতে পারেন। কলকাতায় এই সম্মেলনের আয়োজন পশ্চিমবঙ্গের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি শুধুমাত্র শহরের কৌশলগত গুরুত্বকে তুলে ধরবে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সম্মেলনের জন্য কলকাতায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফোর্ট উইলিয়াম এবং আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, এবং শহরের যানবাহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই সম্মেলন ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশল এবং জাতীয় নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

ইলিশপ্রেমীদের মুখে হাসি, পুজোর আগেই ভারতে আসছে পদ্মার ইলিশ

প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতি এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত তার প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবে।