থিম্পু: ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে সরাসরি লালকেল্লা বিস্ফোরণ নিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে ১২ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার জানান, “দিল্লিতে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তা গোটা দেশকে নাড়া দিয়েছে। যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাঁদের যন্ত্রণা আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি। এই কঠিন সময়ে দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে।”
অনুসন্ধান চলবে
ভুটান সফরে থাকা অবস্থায় এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আজ এখানে এসেছি। গত রাত থেকেই আমি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সত্য উন্মোচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনুসন্ধান চলবে। দায়ীদের কেউই রেহাই পাবে না—ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব।”
সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় পার্ক করা একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত ১২ জনের, আহত একাধিক। মুহূর্তে গোটা এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। বিস্ফোরণের পরেই এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ ও সেনা-বাহিনী। মোতায়েন করা হয় ফরেনসিক টিম, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও বিশেষ সেল।
কোথা থেকে এসেছিল হুন্ডাই i20 PM Modi Red Fort Blast Statement
কেন্দ্র ইতিমধ্যেই UAPA ও Explosives Act-এর আওতায় তদন্ত শুরু করেছে। একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা দিল্লি পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই i20 গাড়িটি ফারিদাবাদের সেক্টর ৩৭-এর এক সেকেন্ড-হ্যান্ড কার ডিলার-এর কাছ থেকে কেনা হয়েছিল। এখন সেই লেনদেন ও যোগাযোগ সূত্রের দিকেই নজর তদন্তকারীদের।
তদন্তে উঠে এসেছে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বিস্ফোরণের ঠিক আগে ও পরে লালকেল্লা চত্বরের আশপাশে সক্রিয় থাকা সব মোবাইল ফোনের ডাম্প ডেটা ও আইপি ডিটেইল রেকর্ড (IPDR) পরীক্ষা করা হচ্ছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট আগেই গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেছিল। তদন্তকারীরা এই ডেটা থেকে সম্ভাব্য যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ট্রেস করার চেষ্টা করছেন।
ফারিদাবাদ মডিউলের সঙ্গে যোগ?
ফারিদাবাদ মডিউলের সঙ্গেও এই বিস্ফোরণের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই এলাকার একাধিক মোবাইল টাওয়ারের ডেটাও বিশ্লেষণ করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে সন্দেহজনক কার্যকলাপ ধরা পড়ে।
এদিকে, দিল্লিজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা হয়েছে। ঐতিহাসিক স্থাপনা, মেট্রো স্টেশন, বাজার ও পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে টহলদারি জোরদার করা হয়েছে। স্নিফার ডগ ও বোম স্কোয়াড মোতায়েন করে চলছে বারংবার তল্লাশি।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভুটান সফরে মঙ্গলবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও আস্থার বন্ধন আরও দৃঢ় করার বার্তা দেন দুই নেতা। সফরের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ‘গ্লোবাল পিস প্রেয়ার ফেস্টিভাল’-এ যোগ দেবেন এবং তাশিচ্ছো দজং মঠে ভারতের পক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়া পিপরহাওয়া বুদ্ধধাতু-র প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।


