‘অপারেশন সিঁদুরের’ সাফল্যের পর প্রথম রাজস্থান সফর মোদীর

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi) আগামী ২২ মে রাজস্থানের বিকানের সফর করতে চলেছেন, যা অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর তাঁর প্রথম রাজ্য সফর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই…

modi will go to rajasthan

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi) আগামী ২২ মে রাজস্থানের বিকানের সফর করতে চলেছেন, যা অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর তাঁর প্রথম রাজ্য সফর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই সফরের সময় তিনি অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি রেলওয়ে স্টেশনের উদ্বোধন করবেন, যার মধ্যে দেশনোকের স্টেশনটিও রয়েছে।

মোদীর সফরের তাৎপর্য (modi) 

এই উদ্বোধন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেশনোকের এই সফর অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা প্রশমন এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর স্বাভাবিক পরিস্থিতির প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।

   

অপারেশন সিঁদুর

অপারেশন সিঁদুর গত ৭ মে শুরু হয়েছিল, যা জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়। এই হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন, যার মধ্যে ২৪ জন ছিলেন ভারতীয় পর্যটক, একজন নেপালি পর্যটক এবং একজন স্থানীয় পনি হ্যান্ডলার।

হামলাকারীরা ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করে নির্বিচারে গুলি চালায়, যা দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে এবং প্রায় ১০০ জন জঙ্গিকে নিকেশ করে। এই অভিযান ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতির একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে, যাকে প্রধানমন্ত্রী মোদী “নতুন স্বাভাবিক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মোদীর সঙ্গে থাকবেন

বিকানের সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর (modi)  সঙ্গে থাকবেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। এছাড়া, তিনি দেশনোকের বিখ্যাত কর্ণী মাতা মন্দিরে দর্শন করবেন এবং জনসাধারণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন(modi) । সফরের প্রস্তুতি পর্যালোচনার জন্য কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল ১৭ মে বিজানেরে আসবেন। জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর প্রস্তুতি শুরু করেছে।

এই সফরের রাজনৈতিক ও কৌশলগত তাৎপর্য

এই সফরের রাজনৈতিক ও কৌশলগত তাৎপর্য উল্লেখযোগ্য। বিকানের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের নিকটবর্তী একটি কৌশলগত অবস্থান। অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, যা পাকিস্তানের ড্রোন এবং মিসাইল হামলা এবং ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করার মধ্য দিয়ে আরও তীব্র হয়। তবে, গত শনিবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সীমান্তে পর্যটকদের চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে, এ ২২টি রেলওয়ে স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে।

মহাকাশে শক্তি দেখাবে ভারত, ১০১তম উপগ্রহ লঞ্চ করবে ইসরো

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন

প্রধানমন্ত্রী মোদী (modi) অপারেশন সিঁদুরকে ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী নীতির একটি “নতুন মানদণ্ড” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, “পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় চলা সন্ত্রাসবাদ একদিন তাদেরই ধ্বংস করবে। সন্ত্রাস এবং আলোচনা, সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না।” তিনি পাকিস্তানকে তার সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো ধ্বংস করার আহ্বান জানান (modi) এবং স্পষ্ট করেন যে ভারত “পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল” সহ্য করবে না।

বিকানেরের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী (modi) সম্ভবত নাল এয়ারবেস পরিদর্শন করবেন, যা সীমান্তের নিকটবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। এই সফর ভারতের সামরিক প্রস্তুতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করবে।

স্থানীয় জনগণ এই সফরকে উৎসাহের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। বিকানেরের সংরক্ষিত লোকসভা আসনের সাংসদ অর্জুন রাম মেঘওয়াল এই সফরকে অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফর বিজানেরের উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।”

এই সফরের প্রস্তুতিতে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মাও বিজানেরে আসতে পারেন। স্থানীয় বিজেপি নেতা এবং কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজনে ব্যস্ত। সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর সীমান্ত এলাকায় শান্তি ফিরে আসায় স্থানীয়রা উৎসবের মেজাজে রয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য এবং প্রধানমন্ত্রীর (modi) এই সফর ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিকে একত্রিত করছে। বিজানেরের এই সফর কেবল অঞ্চলের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং ভারতের কৌশলগত এবং রাজনৈতিক বার্তা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ।