বিহার: বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ–র ঐতিহাসিক জয়ের পর কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi)। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপি কার্যালয়ে কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি কংগ্রেসকে “মিত্রদের জন্য বোঝা” এবং “পরজীবী দল” বলে কটাক্ষ করেন। পাশাপাশি দাবি করেন, কংগ্রেসের ভেতরে এতটাই অসন্তোষ জমেছে যে দলটি খুব শীঘ্রই বড়সড় ভাঙনের মুখোমুখি হতে পারে।
মোদী বলেন, “২০২৪ সালের পর থেকে ছ’টি রাজ্যে একটিও নির্বাচন জিততে পারেনি কংগ্রেস। এই রাজ্যগুলো মিলিয়েও তারা ১০০টি আসন জোগাড় করতে পারবে না। আজ কংগ্রেস পরিণত হয়েছে এমএমসি মুসলিম লিগ মাওবাদী কংগ্রেসে। তাদের সমস্ত রাজনীতি এখন সেই নেতিবাচক মতাদর্শকেই কেন্দ্র করে। ফলে দলের মধ্যেই একাংশ এই রাজনীতি নিয়ে অস্বস্তিতে আছে এবং একটি নতুন গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তাই আমি মনে করি কংগ্রেসে আরেকটি বড় ভাঙন অতি শীঘ্রই দেখা যাবে।”
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় নাম না করেই রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করেন। কংগ্রেসের “নামদার” নেতার নীতিকেই তিনি দলের পতনের প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, “নামদার নেতার ভুল সিদ্ধান্তেই কংগ্রেস আজ দিশেহারা। তাঁর নীতি ও নেতৃত্ব দলের মধ্যে অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলেছে এবং কংগ্রেসকে রাজনৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
মোদী অভিযোগ করেন, কংগ্রেস ইতিবাচক রাজনীতি ছেড়ে শুধুই বিভাজন ও নেতিবাচক প্রচারে মনোনিবেশ করেছে। “ওরা দেশের উন্নয়ন নয়, শুধু বিভেদের কথা বলে। এমনকি দেশের শত্রুদেশের এজেন্ডা পর্যন্ত প্রচার করে। তাই তাদের জোটসঙ্গীরাও এখন বুঝতে পারছে কংগ্রেসের হাত ধরে তাদের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, বিহার নির্বাচনে পরাজয়ের পর আরজেডি ও কংগ্রেসের পুরনো দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে সামনে আসবে। “আমি আগে থেকেই বলেছিলাম কংগ্রেস পরজীবীর মতো মিত্রদের ভোটব্যাঙ্ক খায়। আজকের ফলাফল সেই সত্যিটাই সামনে এনে দিল।”
কংগ্রেসের ভোট চুরির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাঁরা শুধু আমাকে নয়, নির্বাচন কমিশনকেও অপমান করেছেন। কিন্তু বিহারের মানুষ তার জবাব দিয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন, বিহারের ম্যান্ডেট এনডিএ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি আস্থা প্রদর্শন করেছে।
বিজেপি কর্মীদের উজ্জীবিত করে তিনি বলেন, “আজকের বিজয় আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়াল। আগামী পাঁচ বছরে বিহারে আরও শিল্প গড়ে উঠবে, কর্মসংস্থান বাড়বে, যুবকদের জন্য নিজের রাজ্যেই নতুন সুযোগ তৈরি হবে।”
বক্তব্যের শেষে পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “আমরা বিহারে উন্নয়নের রাজনীতি জিতিয়েছি। এবার পশ্চিমবঙ্গেও জঙ্গলরাজ শেষ করে উন্নয়ন প্রতিষ্ঠার লড়াই লড়ব।” তাঁর মতে, মানুষের প্রত্যাশা এখন উন্নত শাসনব্যবস্থা ও নিরাপত্তা, আর বিজেপিই সেই লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম।
মোদী দাবি করেন, বিহারের ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দেশ এখন স্থিতিশীলতা, সুশাসন ও উন্নয়নের রাজনীতিকেই সমর্থন করছে। তাই কংগ্রেসের মতো নেতিবাচক রাজনীতি করা দলগুলো দেশের মানুষের কাছে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে।


