মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) জাতীয় ক্যাডেট কোর (এনসিসি) দিবস উপলক্ষে দিল্লির কারিয়াপ্পা প্যারেড মাঠে এনসিসি ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ (One Nation One Election) বিষয়ে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এবং এর সঙ্গে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উদাহরণস্বরুপ উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, “অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা যুবকদের ভবিষ্যতের সাথে সম্পর্কিত তা হলো আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। গত দুদিন আগে আমরা জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন করেছি। অনেকেই প্রথমবার ভোটার হয়েছেন। এই দিবসের উদ্দেশ্য হল সর্বাধিক সংখ্যক ভোটারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। আজ ভারত বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাচন পালন করে। কিন্তু একটি বিষয় যা আমরা লক্ষ্য করি তা হল, ভারতের মধ্যে নির্বাচনের সময়কাল প্রায় প্রতি কয়েক মাসে একবার হয়।”
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তেব্য বলেছেন, “স্বাধীনতার পর, দীর্ঘ সময় ধরে লোকসভার এবং রাজ্য পরিষদের নির্বাচনের সময় একসাথে অনুষ্ঠিত হত। কিন্তু পরে এই ধারা ভেঙে যায়। এর ফলে দেশ অনেক ক্ষতির সম্মুখীনও হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনে ভোটার তালিকা আপডেট করা হয়। অনেক কাজ করতে হয়, এবং আমাদের শিক্ষকদের অনেক সময় নির্বাচনী ডিউটিতে পাঠানো হয়েছিল, যার ফলে শিক্ষার উপর প্রভাব পড়েছিল, পরীক্ষা প্রস্তুতির উপর প্রভাব পড়েছিল।”
মোদি বলেছেন,”নির্বাচনগুলির ঘনঘন হওয়ার কারণে শাসনব্যবস্থায়ও সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই এখন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক চলছে, যার মধ্যে অনেক মতামত উঠে আসছে এবং এ ধরনের বিতর্ক গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি।”
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন য়ুবক-যুবতীদের উদ্দেশে “আজ আমি বিশেষভাবে ভারতীয় যুবক-যুবতীদের কাছে অনুরোধ করছি, এনসিসি ক্যাডেটদের কাছে অনুরোধ করছি, আমার ভারত এবং এনএসএস স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে অনুরোধ করছি। যে আমরা যেখানে আছি, সেখানে এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করি, এই বিতর্ককে এগিয়ে নিয়ে যায়, নেতৃত্ব দি, এবং ব্যাপকভাবে এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করি। এটি আপনার ভবিষ্যতের সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়।”
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে শোনা যায় আমেরিকার নির্বাচনের কথা, তিনি উল্লেখ করেছেন, “আমেরিকা যেমন নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করে, তেমনি আমাদের কলেজ বা স্কুলের ছাত্র সংসদ নির্বাচনও একসাথে হয়। যদি প্রতি মাসে নির্বাচন হতে থাকে, তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে পড়াশোনা করা সম্ভব হবে? তাই, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে নেতৃত্ব দিতে হবে। সারা দেশে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত, যাতে দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদি তার সরকারের মাধ্যমে দেশকে কীভাবে বদলে দেওয়া হয়েছে, তা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “২০১৪ সালে, আপনি হয়তো ১০, ১২, বা ১৪ বছর বয়সী ছিলেন, তখন পরিবার থেকে জিজ্ঞাসা করুন, পূর্বের পরিস্থিতি কেমন ছিল, উদাহরণস্বরূপ, কোনো নথি আত্মসমর্থন করা। আগে এমনকি ভর্তি, পরীক্ষা, নিয়োগ বা ফর্ম পূরণের জন্যও গেজেটেড কর্মকর্তার মাধ্যমে নথি অনুমোদিত করতে হত। যা অনেক চলাচলের কারণ হত। আমাদের সরকার সেই সমস্যা দূর করেছে এবং আপনাদের উপর আস্থা রেখেছে, এখন আপনি নিজের নথি স্ব-সমর্থন করতে পারেন।”
এছাড়া তিনি জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে বিষয় নির্বাচন পরিবর্তনের সুযোগের কথা উল্লেখ করেন এবং যুবকদের ব্যাংক ঋণ সহজভাবে পাওয়ার সুবিধা দেওয়া মুদ্রা যোজনার কথা বলেন।