HomeBharatব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, ভারত-চীন সম্পর্কের নতুন...

ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, ভারত-চীন সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

- Advertisement -

রাশিয়ার কাজানে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের (President Xi Jinping) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ব্রিকস সামিটের পার্শ্ববর্তী একটি সাক্ষাৎ এবং দুই নেতার মধ্যে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক এবং কাঠামোগত যোগাযোগ। এই বৈঠকের প্রেক্ষাপটে ভারত ও চীনের মধ্যে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বরাবর নিয়মিত প্যাট্রোলিং পুনরুদ্ধারের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এলএসি বরাবর প্যাট্রোলিংয়ের সমঝোতা:
ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা কমাতে এই সমঝোতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এলএসি বরাবর প্যাট্রোলিংয়ের পুনরুদ্ধার দুই দেশের মধ্যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা করেছেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “আমরা বিষয়টি সমাধান করেছি এবং ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে সমাধান বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব।” এটি দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

   

ভারত-চীন সম্পর্কের পুনরুজ্জীবন:
প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই বৈঠকটি ভারত-চীন সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে এলএসি বরাবর সীমান্ত উত্তেজনার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক একটি জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এই বৈঠকটি সেই প্রচেষ্টার একটি অংশ।

ব্রিকস সামিটের প্রেক্ষাপট:
বৈঠকের আগে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শি জিনপিং ব্রিকস ২০২৪ সামিটের ক্লোজড প্লেনারি সেশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জনগণ-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি সংস্কারিত বহু-পাক্ষিকতার আহ্বান জানান এবং ব্রিকসের মাধ্যমে বৈশ্বিক শাসন সংস্কারের ওপর জোর দেন।

গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগ:
ব্রিকসের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আমাদের গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতের গ-২০ সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে গ্লোবাল সাউথ সামিটগুলি আয়োজিত হয়েছে, যা দক্ষিণের দেশের স্বার্থে গুরুত্ব প্রদান করেছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নতুন উদ্যোগ:
বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, ব্রিকসের উদ্যোগগুলি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি, স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন, ই-কমার্স এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাণিজ্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি ছোট ও মাঝারি শিল্পের গুরুত্ব উল্লেখ করেন এবং ভারত দ্বারা শুরু করা ব্রিকস স্টার্টআপ ফোরামের আগমনের মাধ্যমে ব্রিকসের অর্থনৈতিক এজেন্ডায় উল্লেখযোগ্য মূল্য যোগের প্রত্যাশা প্রকাশ করেন।

ভারতের সভাপতিত্ব এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা:
প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ১৬তম ব্রিকস সামিট সফলভাবে আয়োজনের জন্য অভিনন্দন জানান এবং ব্রাজিলের প্রতি শুভেচ্ছা জানান, যেহেতু তারা গ্রুপের সভাপতিত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে। ব্রিকসের কার্যক্রমের মাধ্যমে যে টেকসই উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে, সেটির ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সবুজ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি:
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন যে, “সবুজ উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি ব্রিকস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি চীনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন সবুজ শিল্প, পরিষ্কার শক্তি এবং সবুজ খনির ক্ষেত্রে ব্রিকস দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য।

ভবিষ্যতের প্রত্যাশা:
বৈঠক শেষে, দুই নেতা ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হবে।
এই বৈঠকটি ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং আগামী দিনে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ভারত এবং চীনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম হতে পারে।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular