লন্ডন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পৌঁছলেন লন্ডনে, ভারতীয় প্রবাসীদের উচ্ছ্বসিত অভ্যর্থনার মধ্যে দিয়ে শুরু হল তাঁর সংক্ষিপ্ত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ সফর (PM Modi London Visit)। সফরের মূল লক্ষ্য: ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া, যার কেন্দ্রে রয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA)।
বিমানবন্দরে মোদীকে স্বাগত জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের ইন্দো-প্যাসিফিক বিভাগের মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট, লন্ডনে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এবং নয়াদিল্লিতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার লিন্ডি ক্যামেরন।
সফর উপলক্ষে “ওভারসিজ ফ্রেন্ডস অফ বিজেপি” সংগঠনের সভাপতি কুলদীপ শেখাওয়াত বলেন, “অনেক বছর পর প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখতে পারা আমাদের কাছে এক আবেগঘন মুহূর্ত। খুব অল্প সময়ের সফর হলেও, আমরা তাঁকে স্বাগত জানাতে পেরে গর্বিত।”
এই সফরে মোদী বৈঠক করবেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে, যিনি তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লন্ডনের উপকণ্ঠে অবস্থিত চেকার্স রেসিডেন্সে। সেইসঙ্গে রয়েছে রাজা চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কর্মসূচিও।
মোদী-স্টারমার বৈঠকে মুখ্য আলোচ্য বিষয় হবে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই এবং ভারত-ব্রিটেন ‘কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’-কে আরও জোরদার করা। প্রস্থানের আগে এক বিবৃতিতে মোদী জানান, “আমাদের সহযোগিতা ছড়িয়ে রয়েছে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, গবেষণা, টেকসই উন্নয়ন, স্বাস্থ্য এবং জনগণের মধ্যে সংযোগ, সবক্ষেত্রেই।”
উভয় দেশের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে দেওয়া। ২০২৩-২৪ সালে ভারত-ব্রিটেন বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৫৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে যুক্তরাজ্য ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী, এখনও পর্যন্ত ৩৬ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। অন্যদিকে, প্রায় ১,০০০-র বেশি ভারতীয় সংস্থা ব্রিটেনে কার্যকর, যেগুলিতে কর্মরত প্রায় ১ লক্ষ মানুষ। ভারতে ব্রিটেনের বিনিয়োগ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এটি মোদীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থ ব্রিটেন সফর। এর আগে তিনি সফর করেছেন ২০১৫, ২০১৮ এবং ২০২১ সালে (COP26 সম্মেলনে)। গত এক বছরে মোদী ও স্টারমার দু’বার মুখোমুখি হয়েছেন একবার রিও ডি জেনেইরোতে জি২০ সম্মেলনে, এবং জুনে কানাডার কানানাস্কিসে জি৭ বৈঠকে।
সফর শেষে মোদী পাড়ি দেবেন মালদ্বীপের উদ্দেশে। তবে তার আগে ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনার আশা জোরদার হচ্ছে।