২০২৩ হিংসার শিকারদের সঙ্গে মুখোমুখি মোদী

মণিপুর: ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হওয়া ভয়াবহ জাতিগত হিংসার পর প্রায় দুই বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মণিপুর সফরে (PM Modi in…

২০২৩ হিংসার শিকারদের সঙ্গে মুখোমুখি মোদী

মণিপুর: ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হওয়া ভয়াবহ জাতিগত হিংসার পর প্রায় দুই বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মণিপুর সফরে (PM Modi in Manipur) এসে চুরাচান্দপুরে বাস্তুচ্যুত পরিবার ও হিংসার শিকারদের সঙ্গে দেখা করলেন।

হিংসা শুরুর পর থেকে এটি ছিল তাঁর প্রথম মণিপুর সফর। এই সফরে তিনি একদিকে যেমন হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন, অন্যদিকে ৭,৩০০ কোটি টাকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে রাজ্যের অবকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করলেন।

   

চুরাচান্দপুর জেলায় আয়োজিত সভায় প্রধানমন্ত্রী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি শুনলেন। শিশু, মহিলা ও বয়স্করা প্রধানমন্ত্রীকে নিজেদের সমস্যার কথা জানালেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বললেন, “মণিপুর শুধু সীমান্ত রাজ্য নয়, এটি ভারতের শক্তি ও বৈচিত্র্যের প্রতীক। শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।”

হিংসার শিকারদের অভিযোগ অনুযায়ী, বিগত দুই বছরে তাঁরা বাস্তুচ্যুত জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ আজও শিবিরে বসবাস করছেন। কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভূমি, রাজনৈতিক অধিকার ও সম্পদের ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বই এই ভয়াবহ সংঘাতের মূল কারণ। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৬০ জন নিহত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী চুরাচান্দপুর সফরে ৩,৬০০ কোটি টাকার শহুরে উন্নয়ন প্রকল্প, প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার পাঁচটি জাতীয় সড়ক প্রকল্প, ম্যানিপুর ইনফোটেক ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (MIND), নয়টি উইমেন হোস্টেল, হেলথ কেয়ার ও শিক্ষামূলক অবকাঠামো নির্মাণের ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ইম্ফল শহরে আরও প্রায় ₹১,২০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।

Advertisements

বিরোধীরা অবশ্য এই সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সমর্থকদের মতে, এই সফর মনিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের নতুন দিশা দেখাবে।

রাজ্যের সাধারণ মানুষ এখন অপেক্ষা করছে, এই প্রকল্পগুলো কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কতটা সহায়তা পায়। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন ধরে শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের পুনর্বাসনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন—উন্নয়ন, সংলাপ ও শান্তিই মনিপুরের ভবিষ্যৎ। এই সফর নিঃসন্দেহে প্রতীকী হলেও, বাস্তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।