নয়াদিল্লি: বিহারের রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন অধ্যায় রচনা করলেন নীতীশ কুমার। টানা দশমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরও একবার নিজের অবস্থান সুসংহত করলেন। পাটনার গান্ধী ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি ছিল উৎসবমুখর সমর্থকদের ঢল, বিজেপি–জেডিইউ সমর্থকদের পতাকা, ব্যানার, আর সর্বত্র উচ্ছ্বাস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi gamcha wave), কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, এনডিএ জোটনেতারা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে গান্ধী ময়দান প্রায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
শপথগ্রহণের সবচেয়ে ভাইরাল মুহূর্ত ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর লাল-সাদা বিহারি গামছা নেড়ে জনতাকে শুভেচ্ছা জানানোর দৃশ্য। তিনি যখন গামছা নাড়ালেন, তখন সম্পূর্ণ মাঠ একসঙ্গে উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজনীতিতে প্রতীকী বার্তা দেওয়ার জন্য মোদির এই গমছা নাড়া ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় “গামছা সাইন-অফ”। এর আগে ১৪ নভেম্বর দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরেও একইভাবে গামছা নেড়ে তিনি বিজয় উদযাপন করেছিলেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি এই ভঙ্গি এখন এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের প্রতীক হয়ে উঠছে।
একসময় “সুশাসনের বাবু” হিসেবে পরিচিত নীতীশ কুমার এখন দেশের অষ্টম দীর্ঘতম মুখ্যমন্ত্রী। জেডিইউ এইবার ৮৫টি আসন পেয়ে রাজ্যে নিজেদের শক্তি ধরে রেখেছে। এনডিএ মোট ২০২টি আসন জিতে সরকার গঠন করেছে।
এই শপথের মাধ্যমে নীতীশ কুমার আর একটি লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছেন যদি পুরো মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেন, তবে তিনি সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের ২৪ বছরের রেকর্ডও অতিক্রম করে দেশের দীর্ঘতম মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উঠবেন।
বিজেপির সম্রাট চৌধুরী, বিজয় সিনহা এবং দিলীপ জয়সওয়াল-সহ মোট ১৯ জন বিধায়ক মন্ত্রী পদে শপথ নেন। মন্ত্রী তালিকায় অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং দলগত ভারসাম্য বজায় রাখার স্পষ্ট চেষ্টা দেখা গেছে। এনডিএ জানিয়েছে, সরকার এবার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, মোদীর গামছা নাড়া শুধু আনন্দের মুহূর্ত নয় বরং এটি আসন্ন নির্বাচনী প্রচারের একটি ভিজ্যুয়াল বার্তা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এর ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে এবং বিজেপি ভবিষ্যতে এটি প্রচারের অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলেই অনুমান।


