দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে এদিন এক বিরাট আনন্দের সঞ্চার হয়েছে। এর কারণ, আড়াই দশক পর দিল্লির মসনদে ফিরেছে পদ্ম শিবির। পদ্ম শিবিরের এই ঐতিহাসিক জয়কে উদযাপন করতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত ছিলেন দলের সদর দফতরে।
মোদী নিজে উপস্থিত হয়ে কর্মীদের সঙ্গে উল্লাসের মুহূর্তটি ভাগ করে নেন। তাঁর উপস্থিতিতে বিজেপি সদর দফতর গিজগিজ করছিল ভিড়ের মধ্যে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের একাধিক নেতা-কর্মী এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
মোদী তাঁর ভাষণ শুরু করেন দিল্লির ‘যমুনা’ নাম দিয়ে, যেটি এবারের নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে পরিচিত। তিনি দিল্লির ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “দিল্লির জনগণ ‘আপ’ (আদমি পার্টি) কে বিদায় জানিয়ে বিজেপিকে পুনরায় জয়ী করেছে।” তাঁর দাবি, এই জয় শুধু একটি সাধারণ জয় নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক জয়। তিনি আরও বলেন, “এটি দিল্লির বিজেপি নেতা-কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল। তাদের দৃঢ় প্রচেষ্টার কারণেই এই জয় সম্ভব হয়েছে।”
এদিন মোদী আরও বলেন, “আপের নেতারা জনগণের মধ্যে অহংকার দেখাতে শুরু করেছিল, নিজেদের দিল্লির মালিক হিসেবে তুলে ধরেছিল। তবে আজ জনতা নিজের শক্তি দেখিয়ে প্রমাণ করেছে, দিল্লির আসল মালিক তারা। জনগণই এখানে সর্বেসর্বা।”
তিনি এও উল্লেখ করেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির মানুষ বিজেপির প্রতি আস্থার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রতিটি নির্বাচনেই তারা বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে, আর এবারও সেই সমর্থনই ফিরে এসেছে। একই সঙ্গে মোদী মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা নির্বাচনে বিজেপির জয়কেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই নির্বাচনে মহিলাদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে বিজেপি কাজ করছে। দিল্লিতেও লক্ষ্মী ভাণ্ডারের মতো মহিলাদের জন্য নতুন ভাতা প্রকল্প চালু করা হবে।”
এদিন, মোদী আপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন। তিনি কটাক্ষ করেন, “যে দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তৈরি হয়েছিল, সেই দলই এখন নিজে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের একের পর এক মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী জেল যাওয়ার ঘটনায়, এটা সত্যিই দিল্লির মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
মোদী তার ভাষণে এক হুঁশিয়ারি দেন, “আপের দিন খুব শীঘ্রই শেষ হবে। আমি দিল্লির বিধানসভায় এলেই তাদের দুর্নীতি ফাঁস করে দেব। খুব শীঘ্রই CAG রিপোর্টও সামনে আসবে, যা তাদের দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট করে দেবে।”
এই বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী দিল্লির জনগণের কাছে আবেদন জানান, যেন তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নতির পথে চলতে থাকে। মোদীর এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি এবার দিল্লির রাজনীতিতে নতুন করে ‘ঘনিয়ে আসা’ আপের দিন গুনতে শুরু করেছেন।