তিয়ানজিন (চীন)–এ অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলন শেষে ভারতে ফিরে এসেই পাঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত পাঞ্জাবের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি এবং রাজ্য সরকারকে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এটি কেবল একটি প্রশাসনিক সৌজন্য নয়, বরং একটি তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা, যা প্রমাণ করে যে কেন্দ্র রাজ্যের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত—রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে।
বন্যার করাল গ্রাসে পাঞ্জাব
গত কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতে পাঞ্জাবের একাধিক জেলা, বিশেষত ফিরোজপুর, গুরদাসপুর, হোশিয়ারপুর ও আশেপাশের অঞ্চলগুলো ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। সতলজ, বেয়াস ও রাভি নদীর জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
NDRF, সেনা ও BSF যৌথভাবে উদ্ধারকাজে নেমেছে, তবে পরিস্থিতি এখনও গুরুতর। রাজ্য সরকারও ব্যাপকভাবে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজ নেওয়া নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক সমন্বয়ের একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।
মোদী-মানের ফোনালাপ: কী জানাল কেন্দ্র?
কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্র অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন— “পাঞ্জাবের মানুষের পাশে আছে কেন্দ্র। ত্রাণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য যা যা প্রয়োজন, কেন্দ্র তা দেবে।”
তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক তৎপরতার প্রশংসা করেন এবং বলেন, প্রয়োজনে অতিরিক্ত বাহিনী, ত্রাণ সামগ্রী ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, মানও প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের পরিস্থিতির বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন এবং সহায়তার আবেদন জানান।
রাজনৈতিক সীমারেখার বাইরে মানবিক বার্তা
এই ফোনালাপ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ পাঞ্জাবে আপ (আম আদমি পার্টি)-এর সরকার এবং কেন্দ্রে বিজেপি, যাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য সর্বজনবিদিত। তার পরেও এই যোগাযোগ প্রমাণ করে যে মানবিক সংকটে রাজনৈতিক বিভাজন মুছে যেতে পারে।
মোদীর (Narendra Modi) এই পদক্ষেপ দেখিয়েছে, জাতীয় নেতৃত্ব কেবল রাজনৈতিক নয়, মানবিক সংকটেও দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল।
বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সমন্বয় জরুরি
বন্যার সময় কেন্দ্র-রাজ্যের সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে NDRF, সেনাবাহিনী, ও কেন্দ্রীয় হেল্পলাইন সক্রিয় করা হয়েছে। এছাড়াও, পাঞ্জাব সরকার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ত্রাণ শিবির, চিকিৎসা ক্যাম্প ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা জোরদার করেছে। প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) হস্তক্ষেপ এই সমস্ত পদক্ষেপকে আরও গতিশীল করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।