বিমান বিপর্যয়: অকুস্থলে মোদী, কথা বললেন একমাত্র জীবিত যাত্রীর সঙ্গে

আমেদাবাদ: দগ্ধ গন্ধে ভারী বাতাস, চারপাশে নিস্তব্ধতা-তার মাঝেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন তিনি। যেখানে এয়ার…

PM Modi Ahmedabad visit

আমেদাবাদ: দগ্ধ গন্ধে ভারী বাতাস, চারপাশে নিস্তব্ধতা-তার মাঝেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন তিনি। যেখানে এয়ার ইন্ডিয়ার Boeing 787-8 বিমানটি হস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে মুহূর্তে প্রাণ কেড়ে নেয় ২৪১ জন যাত্রীর।

চোখে জল, হাতে রুমাল-এ দৃশ্য নতুন নয়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মতো ব্যক্তিত্বের এমন আবেগঘন প্রকাশ গোটা দেশকে ছুঁয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী শুধু ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণই করলেন না, কথা বললেন তদন্তকারীদের সঙ্গে। দেখা করলেন ওই দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রীর সঙ্গেও।

   

১২ জুন, দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট

দিল্লি থেকে লন্ডনগামী AI171 (Boeing 787-8 ড্রিমলাইনার, VT-ANB) উড়ানটি আহমেদাবাদ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। উড়ান শুরুর মাত্র ৫-৯ মিনিটের মধ্যে, শহরের মেঘানিনগর এলাকায় একটি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে বিমানটি। তখন সেটি ছিল মাত্র ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল এবং গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৩২০ কিমি। ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৪১ জনের। বিমানটি পরিচালনা করছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন সুমীত সভরওয়াল ও ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর।

কী এই কনফিগারেশন এরর? যা কেড়ে নিল শত শত প্রাণ PM Modi Ahmedabad visit

এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কা রণ হিসাবে উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত শব্দ-“কনফিগারেশন এরর”।
এটি টেক-অফের সময়ের এমন এক যান্ত্রিক/পাইলট-সংক্রান্ত ত্রুটি, যেখানে ফ্ল্যাপসের ভুল সেটিং, কম থ্রাস্ট, সময়ের আগেই রোটেশন (উড়ান শুরু) কিংবা ল্যান্ডিং গিয়ার না তোলার মতো বিষয় জড়িত থাকতে পারে। এইসব ছোট ছোট ভুলও উড়ান ও নিয়ন্ত্রণে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

Advertisements

উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি

  • বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার ছিল নিচে, যা টেক-অফের পর সাধারণত উঠিয়ে নেওয়া হয়।
  • মাত্র ১৮০ ফুট উচ্চতায় ছিল কিছু সময়, যা অস্বাভাবিক।
  • আবহাওয়া ছিল পরিষ্কার, গরমের জন্য বাতাস হাল্কা,তাই পরিবেশগত কোনো বাধা ছিল না।
  • বিমানটির GE GEnx ইঞ্জিন সম্পূর্ণ ভাবে সচল ছিল বলে জানা গিয়েছে।

তদন্ত চলছে, ব্ল্যাক বক্সে রয়েছে উত্তর

কীভাবে এত অভিজ্ঞ পাইলটদের পরিচালনায়, এত উন্নত প্রযুক্তির ড্রিমলাইনার বিমান এমন মর্মান্তিকভাবে ভেঙে পড়ল? এর উত্তর লুকিয়ে রয়েছে বিমানের ব্ল্যাক বক্সে। প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পাওয়া গেলেই জানা যাবে বিমানের শেষ মুহূর্তের গতি, উচ্চতা, পাইলটদের কথোপকথন, এবং যন্ত্রপাতির অবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কনফিগারেশন এররের পেছনে থাকতে পারে-পাইলট ক্লান্তি বা মনোসংযোগের ঘাটতি, ইনসট্রুমেন্ট ফেইলিওর, ফ্লাইট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ত্রুটি, ক্রসচেকের অভাব, তড়িঘড়ি করে উড়ান ছাড়ার চাপ৷ 

এই দুর্ঘটনা শুধু একটি যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, এক ভয়ানক মানবিক বিপর্যয়। প্রাথমিক ত্রুটি কীভাবে মৃত্যু ডেকে আনতে পারে, সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিঃশব্দ অশ্রু সেই বেদনার প্রতীক-যা গোটা দেশের হৃদয়কে কাঁপিয়ে দিল।