Monday, December 8, 2025
HomeBharat'বন্দে মাতরম'-এর বিশ্বাসঘাতক কে? সংসদে 'নেহরু-জিন্নাহ' নিয়ে বড় মন্তব্য মোদীর

‘বন্দে মাতরম’-এর বিশ্বাসঘাতক কে? সংসদে ‘নেহরু-জিন্নাহ’ নিয়ে বড় মন্তব্য মোদীর

- Advertisement -

লোকসভায় সোমবার ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুরু হওয়া স্মারক আলোচনার শুরুতেই ইতিহাস-রাজনীতির তপ্ত সুর ছুঁড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা পাওয়া এই সঙ্গীতকে ঘিরে কংগ্রেসের ‘দীর্ঘদিনের অস্বস্তি’ ও ‘রাজনৈতিক আপস’-এর অভিযোগ আনলেন তিনি। সোজাসুজি আক্রমণ শানালেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর দিকে—যিনি, মোদীর দাবি, মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর আপত্তির সঙ্গে নিজের অবস্থান মিলিয়ে ‘বন্দে মাতরম’ থেকে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগের নেতৃত্বে জিন্নাহ যখন বন্দে মাতরমের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন, তখন কংগ্রেস ও নেহরু তাঁদের প্রতিরোধ না করে উল্টে গানটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুরু করেন। মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় নেহরু সুভাষচন্দ্র বসুকে চিঠি লিখে জানান যে, গানটির ‘আনন্দমঠ’ প্রসঙ্গ মুসলমানদের বিরক্ত করতে পারে।” তাঁর দাবি, এই যুক্তির পরেই কংগ্রেস গানটিকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে “আপসের পথে হাঁটে”, যার বহুবর্ষী প্রভাব জাতীয় রাজনীতিতে আজও রয়ে গেছে।

   

ইমার্জেন্সির প্রসঙ্গ টেনে ঐতিহাসিক তুলনা

বন্দে মাতরমের ১০০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানের সময় দেশ ইমার্জেন্সিতে ‘শ্বাসরুদ্ধ’ ছিল—এমন গুরুতর মন্তব্য করে মোদী বলেন, “এবার ১৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের সুযোগ আছে, স্বাধীনতার সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করা এই মহামন্ত্রের গৌরব পুনরুদ্ধার করার।” তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে আসে “বিশ্বাসঘাতকতার” অভিযোগ, যা তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত করেন। এই মন্তব্যে লোকসভায় শাসক শিবিরের আসন থেকে ওঠে “শেম, শেম” ধ্বনি।

‘প্রশান্তির নামে বিভাজনের বীজ’—মোদীর সরাসরি অভিযোগ

মোদীর ভাষায়—“যে আপস ১৯৩৭ সালে করা হয়েছিল, সেটাই শেষ পর্যন্ত দেশের বিভাজনের রাজনীতি তৈরি করেছিল। আজও কংগ্রেস সেই একই appeasement-এর পথে চলছে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস আজ ‘মুসলিম লিগ-মাওবাদী কংগ্রেসে’ পরিণত হয়েছে।”

বন্দে মাতরম—ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের যুদ্ধঘোষ

১০ ঘণ্টার আলোচনার সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বন্দে মাতরম ছিল ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের যুদ্ধঘোষ। ‘লং লিভ দ্য কুইন’-এর জবাব ছিল এই গান।” তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে ব্রিটিশদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা, গানটি ছাপা ও প্রচার বন্ধের আইন, এবং বাংলায় ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে বন্দে মাতরমের অনন্য ভূমিকার ইতিহাস।

মোদী বলেন, “বঙ্গ ছিল ব্রিটিশ বিভাজনের পরীক্ষাগার। কিন্তু বন্দে মাতরম সেই বিভাজনের মাঝেও একতার সেতু তৈরি করেছিল।” তিনি বাংলা ও তামিল ভাষায় গানটির অংশ উচ্চারণ করে ‘জাতীয় ঐক্য’-র প্রতীক হিসেবে বন্দে মাতরমের পুনঃমর্যাদার আহ্বান জানান।

‘জাতীয় ঐক্যের ঋণ স্বীকারের সময় এসেছে’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই গান আমাদের বেদযুগের স্মৃতি জাগায়। বলে—এই ভূমি আমার জননী, আমি তার সন্তান। আমরা সকলে এই গানটির কাছে ঋণী। আজ দেশকে আবারও ঐক্যের পথে ফেরার সময় এসেছে।”

তিনি যোগ করেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণে, আত্মনির্ভর ও উন্নত ভারত গড়তে বন্দে মাতরম ভবিষ্যৎ পথপ্রদর্শক হোক।”

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular