তামিলনাড়ুতে রাজ্যপালের হাত থেকে পুরস্কার বয়কট পিএইচডি স্কলারের

তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলির মানোমানিয়াম সুন্দরনার বিশ্ববিদ্যালয়ের (PHD Scholar) ৩২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঘটল এক অভিনব ঘটনা। পিএইচডি স্কলার জিন জোসেফ তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আর.এন. রবির…

PHD Scholar award boycot

তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলির মানোমানিয়াম সুন্দরনার বিশ্ববিদ্যালয়ের (PHD Scholar) ৩২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঘটল এক অভিনব ঘটনা। পিএইচডি স্কলার জিন জোসেফ তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আর.এন. রবির হাত থেকে তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করতে অস্বীকার করলেন।

বুধবার অনুষ্ঠিত এই সমাবর্তনে জিন পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এন. চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে তাঁর ডিগ্রি গ্রহণ করেন। নাগেরকয়েলের বাসিন্দা জিন জোসেফ, যিনি ডিএমকে নাগেরকয়েলের ডেপুটি সেক্রেটারি এম. রাজনের স্ত্রী, তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন যে, রাজ্যপাল রবি, তামিলনাড়ু এবং তামিল জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

   

এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।অনুষ্ঠানটি তিরুনেলভেলির ভিওসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাজ্যপাল আর.এন. রবি স্বর্ণপদক এবং ডিগ্রি প্রদানের দায়িত্বে ছিলেন। ভাইস-চ্যান্সেলর এন. চন্দ্রশেখরও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তবে, তামিলনাড়ুর উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী গোভি চেজিয়ান প্রশাসনিক ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে এই সমাবর্তনে অনুপস্থিত ছিলেন, যা রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে চলমান উত্তেজনার একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। জিন জোসেফ মঞ্চে গিয়ে গভর্নরের পাশ দিয়ে হেঁটে উপাচার্যের কাছে পৌঁছান এবং তাঁর হাত থেকে ডিগ্রি গ্রহণ করেন।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাজ্যপাল রবি তাঁকে হাসিমুখে পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইঙ্গিত করলেও, জিন তাঁর দিকে না তাকিয়ে উপাচার্যের কাছে যান এবং ডিগ্রি নিয়ে “থ্যাঙ্ক ইউ” বলে চলে যান।ডিগ্রি গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জিন জোসেফ বলেন, “রাজ্যপাল তামিলনাড়ু এবং তামিল জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

তাই আমি তাঁর হাত থেকে আমার পিএইচডি ডিগ্রি নিতে চাইনি। আমি উপাচার্যের কাছ থেকে এটি গ্রহণ করেছি।” তাঁর এই পদক্ষেপ তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার এবং রাজ্যপাল রবির মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধের প্রেক্ষাপটে একটি প্রতিবাদী অবস্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে।তামিলনাড়ু সরকার এবং রাজ্যপাল রবির মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলছে।

বিশেষ করে, রাজ্য বিধানসভার পাস করা বিলগুলির অনুমোদন নিয়ে রাজ্যপালের বিলম্ব এবং অস্বীকৃতি নিয়ে ডিএমকে সরকার বারবার সমালোচনা করেছে। ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রাজ্য বিধানসভা ১৩টি বিল পাস করলেও, গভর্নর রবি এর মধ্যে ১০টি বিল ফিরিয়ে দিয়েছেন বা অনুমোদন দিতে অস্বীকার করেছেন।

Advertisements

এমনকি, সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জিন জোসেফের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিবাদ হিসেবে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।সামাজিক মাধ্যমে জিনের এই পদক্ষেপের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

অনেকে তাঁর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, বলেছেন যে এটি তামিল জনগণের স্বার্থে দাঁড়ানোর একটি উদাহরণ। তবে, কেউ কেউ এটিকে সমাবর্তনের মতো আনুষ্ঠানিক মঞ্চে অযাচিত পদক্ষেপ হিসেবে সমালোচনা করেছেন।

ডিএমকে নেতারা এই ঘটনাকে তামিল জনগণের আত্মসম্মানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যদিও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার বিষয়ে নীরব রয়েছে, এবং রাজ্যপালের কার্যালয় থেকেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, এই ঘটনা তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নতুন আলোকপাত করেছে।

‘জওয়ানদের রক্তের দামে…’ ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে সরব বিশ্বকাপজয়ী তারকা

জিন জোসেফের এই প্রতিবাদী পদক্ষেপ তামিলনাড়ুর শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতার একটি নতুন রূপ প্রকাশ করেছে। এটি গভর্নর এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে চলমান সংঘাতের একটি প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।