National Desk: শারীরিক সমস্যা ও জেলবন্দি থাকায় শেষ দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদব। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ভর্তি ছিলেন দিল্লির এইমসে। গত সপ্তাহেই তিনি দিল্লি থেকে পাটনায় ফিরেছেন। পাটনায় ফিরেই মঙ্গলবার জানালেন, মানুষের ভালোবাসার কারণেই তিনি ফিরে আসতে পেরেছেন। শুধু ফিরে আসাই নয়, আবার তিনি আগের মত সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেবেন বলেও জানালেন লালু।
এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে লালু বলেন, শারীরিক অসুস্থতা এবং জেলের ভিতর থাকায় আমি গত দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নিতে পারিনি। এই মুহূর্তে রাজ্যে দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। উপনির্বাচনের আগেই আমি বিহারের ফিরতে পেরেছি। আমি ওই দুই কেন্দ্রে প্রচারে যাব। মানুষের ভালবাসাই আমাকে বিহারে ফিরিয়ে এনেছে। মানুষের ভালবাসার প্রতিদান তিনি শীঘ্রই ফিরিয়ে দেবেন। লালু আরও বলেন, ২৭ অক্টোবর তিনি কুশেশ্বর আস্থান ও তারাপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখবেন।
সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিন্ন করার কথা বলেছেন লালু। পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এদিন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে তীব্র কটাক্ষ করেন। লালু বলেন, নীতীশ অত্যন্ত লোভী ও ক্ষমতা পিপাসু। যে কারণে এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অন্যদিকে বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, মোদির আমলে সামান্য ভোজ্যতেলের দামও আকাশছোঁয়া হয়েছে। সরষের তেল ছাড়া মানুষ কী দিয়ে রান্না করবে? ডিজেল তো এখন ঘিয়ের থেকেও দামি হয়ে গিয়েছে। লালু বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকরা নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন। কিন্তু মোদি সরকার এসব দেখতেই পাচ্ছে না। তারা প্রতিদিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে চলেছে। ভোজ্যতেল মানুষের আয়ত্বের বাইরে নিয়ে চলে গেছে। অন্যদিকে হাজার হাজার মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এসব কথা ভাবার মত সময় মোদির নেই। সাধারণ মানুষকে বাঁচতে হলে এই দলকে আগে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।
কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে লালু বলেন, জোট সবসময় সম মানসিকতাসম্পন্ন দলগুলির মধ্যে হয়। রাজ্যস্তরে আমরা কংগ্রেস, বাম-সহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোট করেছি। কংগ্রেসকে আমরা যে ধরনের সহযোগিতা করেছি অন্য কোনও দল তা করেনি। কংগ্রেস অত্যন্ত পুরনো দল। জাতীয় স্তরে তাদের স্বীকৃতি রয়েছে, আমরা সেটা মানি। কিন্তু ওরা আমাদের প্রাপ্য সম্মান দেয়নি। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে পথ চলার কোনও অর্থ হয় না।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বিহার শাসন করেছে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রে রেল মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন আরজেডি সুপ্রিমো। কিন্তু ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিহারে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন লালু। ওই কেলেঙ্কারির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে জেলে ছিলেন তিনি। তবে জেলে থাকলেও বেশিরভাগ সময়ই তিনি কাটিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের রিমসে। চলতি বছরের প্রথম দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লালুকে দিল্লির এইমসে ভর্তি করা হয়েছিল। এইমসের চিকিৎসকদের সম্মতি মেলায় গত সপ্তাহেই লালু দিল্লি থেকে পাটনা ফিরেছেন।