নয়াদিল্লি: চবনপ্রাশের বিজ্ঞাপনে দিল্লি হাইকোর্টের তুমুল ভর্ৎসনার মুখে পড়ল বাবা রামদেবের (Baba Ramdev) পতঞ্জলি (Patanjali)আয়ুর্বেদ। বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi High Court) বিচারপতি তেজস কারিয়ারের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে তুলনামূলক বিজ্ঞাপন অনুমোদিত হলেও, কোনও ব্র্যান্ড বিজ্ঞাপনের স্বার্থে অন্যদের ‘ছোট’ করতে পারে না।
জাস্টিস কারিয়া এদিন বলেন, “আপনি নিজেকে সেরা বলতে পারেন। কিন্তু অন্যরা ‘ধোঁকা’ বা ‘প্রতারণা’ করছে এটা আপনি বলতে পারেন না। হিন্দি শব্দ ‘ধোঁকা’-র পরিবর্তে পতঞ্জলিকে (Patanjali) অন্য কোনও শব্দ ব্যবহার করতে বলে আদালত। বস্তুত, সম্প্রতি পতঞ্জলির একটি চবনপ্রাশের বিজ্ঞাপন “51 ভেষজ। 1 সত্য। পতঞ্জলি চবনপ্রাশ!”-এর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানায় “ডাবর ইন্ডিয়া” (Dabur India)।
পতঞ্জলির বক্তব্য
পতঞ্জলির (Patanjali) তরফের আইনজীবী রাজীব নায়ার আদালতে পাল্টা যুক্তি দেন যে, ‘ধোঁকা’ বলতে পতঞ্জলি অন্যান্য ব্র্যান্ডের চবনপ্রাশকে (Chyawanprash) ‘সাধারণ’ বলতে চেয়েছে। কাউকে অসম্মান করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। বর্ষীয়ান আইনজীবী নায়ার বলেন, “পতঞ্জলি বলতে চাইছে, অন্য সকলেই সাধারণ – সাধারণ চবনপ্রাশ। এর অর্থ হল অন্য সকলেই অকার্যকর। ধোঁকা অর্থে তাঁরা বোঝাতে চাইছে যে তাঁরা বিশেষ এবং অন্যরা সাধারণ।”
মানহানির অভিযোগ ডাবরের
ডাবর ইন্ডিয়ার (Dabur India) তরফের আইনজীবী সন্দীপ সেঠি যুক্তি দেন, এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পতঞ্জলি চবনপ্রাশ প্রস্তুতকারকদের মর্যাদাহানি করেছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী সেঠি বলেন, চবনপ্রাশের (Chyawanprash) ক্ষেত্রে অন্যদতম বড় ব্র্যান্ড হল ডাবর। বাজারের প্রায় ৬০%-ই তাঁদের হাতে। সেক্ষেত্রে পতঞ্জলির এই বিজ্ঞাপন অন্যান্য সকল চবনপ্রাশ প্রস্তুতকারক থেকে শুরু করে বিক্রেতার অপমান করছে।
সেঠি বলেন, “কেন ৪০টি ভেষজেই থেমে যাবে?” এই লাইনের মাধ্যমে সরাসরি ডাবরকেই টার্গেট করা হয়েছে বলে যুক্তি দেন সন্দীপ সেঠি। কেননা ডাবরের চবনপ্রাশের বিজ্ঞাপনেই ৪০টি ভেষজ দিয়ে তৈরির উল্লেখ আছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী আরও বলেন, “ধোখা খাও” শব্দের অর্থ হল ভোক্তারা প্রতারণামূলক পণ্য খাচ্ছেন।
বিশেষ করে একজন স্বঘোষিত যোগগুরুর কাছ থেকে আসা কথাটি অনেক বেশি গুরুতর। মানুষ একজন যোগগুরুর সাথে সত্যবাদিতাকে যুক্ত করে। তাই বিজ্ঞাপণে শব্দচয়নের ক্ষেত্রে পতঞ্জলির আরও সতর্ক হওয়া উচিৎ বলে মত প্রকাশ করে ডাবর।


