বাজারে প্রতিযোগিতার নামে অন্য সংস্থার পণ্যকে ‘প্রতারণামূলক’ বা ‘ভুল ধারণা সৃষ্টি করে এমন’ বলা যাবে না, এমনই কঠোর পর্যবেক্ষণ দিল দিল্লি হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার আদালত প্রশ্ন তোলে, আয়ুর্বেদ সংস্থা পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ কীভাবে অন্য সংস্থার চ্যবনপ্রাশকে ‘ভুল ধারণা সৃষ্টি করা পণ্য’ বলে উল্লেখ করতে পারে?
বিচারপতি তেজস কারিয়া বলেন, “আপনি বলতে পারেন আপনার পণ্য সেরা, কিন্তু অন্যদের প্রতারণামূলক বলা যায় না। ইংরেজি অভিধায় এই শব্দের অর্থ ‘fraud’ ও ‘deception’। এটা অন্য সংস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।”
মামলা করেছে ডাবর ইন্ডিয়া লিমিটেড
এই মামলাটি দায়ের করেছে ডাবর ইন্ডিয়া লিমিটেড, পতঞ্জলির এক সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপনকে ‘মানহানিকর’ বলে অভিযোগ তুলে। ২৫ সেকেন্ডের ওই বিজ্ঞাপনে এক নারীকে দেখা যায় সন্তানকে চ্যবনপ্রাশ খাওয়াতে গিয়ে বলছেন, “চলো আবার ভুলে ভরা চ্যবনপ্রাশ খাও।” এরপর রামদেব বলেন, “অধিকাংশ মানুষ চ্যবনপ্রাশের নামে ভুল পথে যাচ্ছেন।”
ডাবরের পক্ষের আইনজীবী সন্দীপ সেঠির দাবি, পতঞ্জলির এই বিজ্ঞাপন শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো চ্যবনপ্রাশ শিল্পকেই ‘ভ্রান্ত’ হিসেবে তুলে ধরছে। “ডাবর বাজারের ৬০ শতাংশেরও বেশি ভাগীদার। এমন ভাষা প্রতিযোগিতার ন্যায্য সীমা অতিক্রম করছে,” তিনি বলেন।
পতঞ্জলির যুক্তি Patanjali Dabur Chyawanprash Case
পতঞ্জলির আইনজীবী রাজীব নায়ার যুক্তি দেন, “আমরা অন্য পণ্যকে ভেজাল বলিনি। শুধু বলেছি, তুলনামূলকভাবে সেগুলি কম কার্যকর।” তবে বিচারপতি মন্তব্য করেন, “আপনি অন্যদের ‘ordinary’ বা ‘সাধারণ’ বলতে পারেন, কিন্তু ‘ভুল’ বা ‘প্রতারণামূলক’ বললে তা অবমাননাকর হয়।”
আদালত এদিন রায় সংরক্ষণ করেছে। অর্থাৎ, ডাবরের অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নিয়ে শীঘ্রই রায় দেবে হাই কোর্ট।
উল্লেখ্য, এর আগেও জুলাই মাসে দিল্লি হাই কোর্ট পতঞ্জলির এক বিজ্ঞাপন থেকে “Why settle for ordinary Chyawanprash made with 40 herbs?” বা মাত্র ৪০টি ভেষজে তৈরি সাধারণ চ্যবনপ্রাশে কেন সন্তুষ্ট থাকবেন? লাইনটি বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে ডিভিশন বেঞ্চও সেই নির্দেশ বহাল রাখে।


