আজ থেকে সংসদ অধিবেশন…বিরোধীদের সাঁড়াশি চাপে NDA?

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভার প্রথম অধিবেশন।‌ তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির মসনদে বসার পর এটাই হতে চলেছে তাঁর প্রথম সংসদ অধিবেশন। গত…

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভার প্রথম অধিবেশন।‌ তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির মসনদে বসার পর এটাই হতে চলেছে তাঁর প্রথম সংসদ অধিবেশন। গত দুবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার আর একার ক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তাই নীতীশ কুমারের জেডিইউ ও ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপির সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গড়তে হয়েছে। অন্যদিকে গত দু’বার এর তুলনায় এবার যথেষ্ট শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ বিরোধীরা।‌ সুতরাং এই নয়া লোকসভা অধিবেশনে বিরোধীদের সামলাতে নবগঠিত এনডিএ সরকারকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত ৪ ঠা জুন ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল দিল্লির অলিন্দে।‌

কারা সরকার গড়বে, তা নিয়েই চলতে থাকে দর কষাকষির পালা। অবশেষে দুই জোট সঙ্গীকে নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা।

   

এদিকে বিরোধী বাঁধে স্পিকার পদ নিয়ে। প্রথম থেকে এনডিএ সরকারকে সমর্থনের জন্য স্পিকার দাবি করেছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তা নিয়ে এখনো মেটেনি জল ঘোলা। কিন্তু প্রোটেম স্পিকার পদে ইতিমধ্যেই ওড়িশার বিজেপি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাবের নামে সিনেমা হল দিয়েছে নতুন মন্ত্রিসভা। সোমবার অধিবেশন শুরুর আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে শপথ নেন তিনি। যদিও সংবিধান অনুযায়ী প্রোটেম স্পীকার পথটি বিরোধীদের পাওয়ার কথা।‌ সেইমতো কেরলের কংগ্রেস সংসদ কে সুরেশের নাম পছন্দের তালিকায় রেখেছিল রাহুল গান্ধী ব্রিগেড। ‌ কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই পদটিও বিজেপির হাতে যাওয়ায় তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোট। আগামীকাল ২৫ জুন সংসদের স্পিকার নির্বাচন করা হবে। তা নিয়ে ইতিমধ্যে ঘরের মধ্যেই চাপে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এবার এই ইস্যুতে সংসদে বিরোধীদের আক্রমণ কিভাবে সামলায় নয়া সরকার সেটাই দেখার।

স্পিকার পদ ছাড়াও ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট ও অধ্যাপনার জন্য নেট পরীক্ষায় দুর্নীতি ইস্যুতে এনডি এ সরকারকে সাঁড়াশি আক্রমণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিরোধীরা। এই মুহূর্তে নিট দুর্নীতিতে উত্তাল সারা দেশ। আর এই জালিয়াতি চক্রের পর্দা ফাঁস করতে সারাদেশে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও। চাপে পড়ে একরকম বাধ্য হয়েই পরীক্ষা দুর্নীতি রুখতে আইন এনেছে নতুন মন্ত্রিসভা। তবে যাই হোক না কেন, মোদী সরকারের এই দুর্নীতির কোনভাবেই হালকা ভাবে নিতে নারাজ বিরোধী জোট। 

এছাড়াও এক্সিট পোলের মাধ্যমে শেয়ারবাজার জালিয়াতি ইস্যুটি নিয়েও সরব হতে চায় কংগ্রেস। সংসদ অধিবেশন শুরু হলেই এই বিষয়ে যৌথ সংসদীয় তদন্ত বা জেপিসির দাবি করে এসেছে কংগ্রেস। তবে সেই বিষয়ে কতদূর জলগড়ায় এখন সেটাই দেখার। এদিন শুরু থেকেই সংসদের বাইরে সংবিধান হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কংগ্রেস সহ বিরোধী জোটের সাংসদেরা। 

গত দু’বার এর তুলনায় এবার সংসদের চেহারা অনেকটাই অন্যরকম। ধারেও ভারে এখন অনেকটাই শক্তিশালী বিরোধী শিবির। তাই আগের মতো বল প্রয়োগ করে সাংসদদের বরখাস্ত করা কিংবা বিরোধীশূন্য সংসদে বিল পাস করানো কত সহজ হবে না কেন্দ্রের পক্ষে। নয়া সংসদ গতবারের তুলনায় অনেকটাই গণতান্ত্রিক হবে বলেই আশা করছে রাজনৈতিক মহল।