দিল্লি: আগামী মঙ্গলবার, অর্থাৎ ২৯ জুলাই, সংসদের উভয় কক্ষে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) নিয়ে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। মনসুন অধিবেশনের মধ্যে কেন্দ্র সরকার এই বিশেষ আলোচনার জন্য ১৬ ঘণ্টা বরাদ্দ করেছে বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে।
সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বুধবার বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির (BAC) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ২৯ জুলাই রাজ্যসভায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি লোকসভাতেও এই আলোচনা শুরু হবে বলে সূত্রের খবর। দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ১৬ ঘণ্টার আলোচনা চলবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
এই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর বক্তব্য রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিরোধী দলগুলি জোর দিয়ে বলেছে, এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে উপস্থিত থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
এই আবহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের দাবি করেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ পরিস্থিতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তিনি “সিজফায়ার” (ceasefire) বাস্তবায়নে সাহায্য করেছেন। ট্রাম্পের এমন দাবিকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত ট্রাম্পের দাবির বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়াও দেননি। গত ৭৩ দিনে ট্রাম্প মোট ২৫ বার বলেছেন যে তিনি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তিনি কে? এটা ওঁর কাজ নয়। অথচ প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ নীরব। এটা বাস্তবতা, এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “যাঁরা নিজেদের দেশভক্ত বলেন, তাঁরা এই মুহূর্তে নিশ্চুপ। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিদেশ সফর করছেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করছেন।”
প্রসঙ্গত, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষের তরফে কোনও বিশদ বিবৃতি আসেনি। তবে এই আলোচনার মাধ্যমে মোদী সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, কূটনৈতিকভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, যদি ট্রাম্পের দাবিগুলির কোনও ভিত্তি না থাকে, তবে তা স্পষ্ট করাও অত্যন্ত জরুরি।
বিরোধীদের মতে, যদি সত্যিই কোনও সিজফায়ার চুক্তি হয়ে থাকে, তা হলে দেশের জনগণকে অবগত করাও সরকারের দায়িত্ব। আর যদি না হয়ে থাকে, তা হলে বিদেশি নেতার ভুয়ো দাবির বিরুদ্ধে সরকারকে মুখ খোলার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা।
২৯ জুলাইয়ের এই বিতর্ক ঘিরে এখন রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কবে সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানাবে, তার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।