দুবাই: “হাম শহীদ হোন সে বাচ গায়ে!” এই কথা বলে এক পাকিস্তানি সাংবাদিক হাসতে হাসতে ক্যামেরার সামনে লাফিয়ে উঠলেন, যখন ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান তেজস দুবাই এয়ার শোতে দুর্ঘটনায় পড়ে একজন বীর পাইলটের প্রাণ কেড়ে নিল। এটি কোনো ব্যক্তিগত বিত্তকথা নয়, বরং একটি জাতীয় বিপত্তির মুহূর্তে প্রকাশ্যে হাসি-ঠাট্টা করে একটি প্রতিবেশী দেশের সাংবাদিকের লজ্জাহীনতা, যা ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতার গভীরতা প্রকাশ করে।
শুক্রবার দুপুর ২:১০ মিনিটে আল মাকটুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বমানের এয়ার শোর শেষ দিনে তেজসের এই দুর্ঘটনা শুধু ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য ধাক্কা নয়, বরং একজন পাইলটের বলিদানকে ঘিরে পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া নির্মম প্রতিক্রিয়া দেশীয় সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায় পরিণত হয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে, কিছু মানুষের রক্তে ঘৃণা এত গভীরভাবে মিশে গেছে যে, মানবতার সামান্যতম স্থানও নেই।দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয় অ্যারিয়াল ডিসপ্লের সময়।
পাঁচ বছর পর ভারত পুনরায় খুলল চিনা পর্যটক ভিসা
হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল)-নির্মিত এই ৪.৫ জেনারেশনের লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফটটি অ্যারোব্যাটিক ম্যানুভার করতে গিয়ে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে। বিস্ফোরণের সঙ্গে আকাশ ছুঁয়ে উঠে কালো ধোঁয়া, এবং দর্শকদের মধ্যে আতঙ্কের ছড়িয়ে পড়া। উইং কমান্ডার নমনশ সিয়াল ইজেক্ট করতে পারেননি এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএফ) তাৎক্ষণিক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, “আমরা এই দুর্ঘটনায় গভীরভাবে দুঃখিত।
পাইলটের পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। একটি তদন্ত কোর্ট গঠিত হচ্ছে কারণ জানতে।” চীফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহানও সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, “এটি আমাদের সকলের জন্য ক্ষতি। তেজস ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক, এবং এই ঘটনা থেকে আমরা শিখব।” এই দুর্ঘটনা তেজসের দ্বিতীয় গত মার্চে রাজস্থানের জয়সলমীরে একটি ট্রেনিং ক্যাম্পে একই ঘটনা ঘটে, যেখানে পাইলট নিরাপদে বেঁচে যান।
কিন্তু এই করুণ মুহূর্তে পাকিস্তানি সাংবাদিকের এক্স হ্যান্ডেল পোস্ট মানবতার লজ্জা বলে উল্লেখ করেছেন ভারতীয় নেটিজেনরা। এমনকি ভিডিওতেও এক পাকিস্তানি মিডিয়া ব্যক্তি দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে বলছেন, “হাম শহীদ হোন সে বাচ গায়ে! কালকেই তো এই বিমান থেকে তেল লিক হয়েছিল, আজ পাকিস্তানিরা বেঁচে গেল।” তিনি এমনকি হাত তুলে ‘শুকরিয়া আল্লাহ’ বলে উল্লাস করছেন, যেন এটি কোনো খেলার জয়, কোনো মানুষের মৃত্যু নয়।
