Pakistan Nepal terror corridor: ভারতে হিংসা ছড়ানোর চক্রান্তে পাকিস্তান ফের সক্রিয় হয়েছে এবং এবার তারা নেপালকেও হাতিয়ার করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির যৌথ অভিযান চালিয়ে আইএসআই-এর দুই স্লিপার সেল সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নেপাল-উৎপত্তি যুক্ত এজেন্ট আনসরুল মিয়াঁ আনসারি, যিনি দিল্লি থেকে গ্রেফতার হন। তার কাছ থেকে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক গোপন নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের তরফে মে মাসে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং ধৃত দুই আইএসআই এজেন্ট বর্তমানে তিহার জেলে বন্দী রয়েছে। সূত্রের খবর, এই গোটা অভিযানটি একটি অত্যন্ত গোপন অপারেশন ছিল এবং তাতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল।
জানা গেছে, আনসরুল মিয়াঁ আনসারি মূলত নেপালের বাসিন্দা। কাতারে ট্যাক্সি চালানোর সময় তার সঙ্গে এক আইএসআই হ্যান্ডলারের পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্রেই তাকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই আইএসআই-এর শীর্ষ আধিকারিকদের কাছ থেকে কয়েকদিন ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে নেপালের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করিয়ে দিল্লিতে পাঠানো হয় একটি নির্দিষ্ট মিশনের উদ্দেশ্যে।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, আইএসআই আনসরুলকে নির্দেশ দিয়েছিল যে সে যেন ভারতীয় সেনা ও নিরাপত্তা সংস্থার সংবেদনশীল নথি সংগ্রহ করে তার একটি সিডি তৈরি করে পাকিস্তানে পাঠায়। এই উদ্দেশ্যেই সে দিল্লিতে আসে। কিন্তু গোপন নজরদারিতে থাকা অবস্থায়ই তাকে দিল্লির একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তার জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও এক এজেন্টকে ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় আরও উদ্বেগের বিষয় হল, পাকিস্তান এবার ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালকে ব্যবহার করছে এক ধরনের ‘সফট করিডর’ হিসেবে। কারণ নেপালের সঙ্গে ভারতের উন্মুক্ত সীমান্ত থাকার কারণে যাতায়াতে বাধা কম, আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে আইএসআই। গোয়েন্দাদের মতে, নেপালকে ঘাঁটি করে এ ধরনের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের কৌশল। তবে এবারের ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সতর্কতায় বড়সড় ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস হল।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া গোপন নথিগুলির মধ্যে দেশের বিভিন্ন সেনা ছাউনির অবস্থান, কৌশলগত পরিকল্পনা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্য ছিল। এসব তথ্য পাচারের উদ্দেশ্য ছিল দেশের অভ্যন্তরে অস্থিরতা তৈরি ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হিংসা উস্কে দেওয়া।
বর্তমানে ধৃত দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, গুপ্তচরবৃত্তি ও অনুপ্রবেশ আইনে মামলা রুজু হয়েছে এবং তদন্ত জারি রয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বিশ্বাস করছে, এই চক্রের সঙ্গে আরও কিছু ব্যক্তি যুক্ত থাকতে পারে, এবং সেক্ষেত্রে নেপালের ভূখণ্ডেও আরও নজরদারি চালানো হতে পারে।
ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পাকিস্তানের এমন পরিকল্পনা নতুন কিছু নয়, তবে নেপালের ভূমিকা নিয়ে এবার আরও সতর্ক দৃষ্টিতে নজর রাখছে ভারত। দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এই সফল অভিযান সাময়িকভাবে ষড়যন্ত্র রুখতে সক্ষম হলেও, সামনের দিনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।