লন্ডন, ৩ অক্টোবর: “পাকিস্তান টাইটানিকের মতো ধীরে ধীরে ডুবছে!” (POK Protest) এই কথা বলেছেন ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টি (ইউকে পিএনপি)-র একজন শীর্ষ নেতা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওজেকে) চলতি হিংসাত্মক বিক্ষোভের পিছনে প্রচণ্ড দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অর্থনৈতিক অবনতি মূল কারণ বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। ইউকে পিএনপি, যা পাকিস্তান দখলকৃত কাশ্মীরের স্বাধীনতা ও অধিকারের জন্য লড়াই করে, এই বিক্ষোভগুলোকে পাকিস্তান সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই ঘোষণা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
রক্তচোষা রাজনীতি করছে BJP: কারুর-মৃত্যুর ঘটনায় বিস্ফোরক স্ট্যালিন
ইউকে পিএনপি-র নেতা আমজাদ আয়ুব খান, যিনি লন্ডন থেকে এই বিবৃতি দিয়েছেন, বলেন, “পাকিস্তানের অর্থনীতি টাইটানিক জাহাজের মতো অচল হয়ে পড়েছে। POK তে মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুৎ সংকট এবং খাদ্যাভাবের মধ্যে লোকেরা রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু এর পিছনে শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনৈতিক দমন এবং দুর্নীতির জালই মূল অপরাধী।”
খানের মতে, পাকিস্তান সরকার POK তে সামরিক শাসন চালিয়ে যাচ্ছে, যা স্থানীয়দের ভাষা, সংস্কৃতি এবং অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত মাসে মীরপুর, মুজাফরাবাদ এবং কোটলিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, যা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু এবং শত শত আহত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯৪৭ সালের বিভাজনের পর থেকে এই অঞ্চল পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা স্বায়ত্তশাসন এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দাবি করে আসছে। সাম্প্রতিক কালে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ ট্যারিফ বাড়ানো, জ্বালানি মূল্যস্ফীতি এবং চাকরির অভাব নিয়ে আন্দোলন। কিন্তু ইউকে পিএনপি-র দাবি, এগুলোর মূলে রয়েছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতি।
“ইসলামাবাদ থেকে আসা কর্মকর্তারা লক্ষ লক্ষ ডলারের সাহায্য তহবিল লুট করছে। স্থানীয় প্রকল্পগুলো কাগজে থেকে বাস্তবে স্থাপিত হচ্ছে না,” খান বলেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো সংস্থাগুলোর রিপোর্টে POK -তে নির্যাতন, গুম এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরে ২০০-এর বেশি রাজনৈতিক কর্মী গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা গেছে।
‘I Love Mohammad’-বিতর্কে অগ্নিগর্ভ বারেলি, বন্ধ ইন্টারনেট!
পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, এই বিক্ষোভ “বহিরাগত শক্তির ষড়যন্ত্র” এবং “ভারতীয় প্রোপাগান্ডা”। প্রধানমন্ত্রী শহবাজ শরিফের সরকার দাবি করেছে যে, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আইএমএফ-এর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে এবং POK -তে উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা হবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এটি শুধু প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা। ইউকে পিএনপি-র মতো নির্বাসিত গ্রুপগুলো আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছে। খান বলেন, “রাষ্ট্রসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। POK-র মানুষেরা স্বাধীন নির্বাচন এবং অধিকার চায়, দমন নয়।”