সন্ত্রাস বন্ধ না হলে জল নয়! পাকিস্তানের কাতর অনুরোধেও অনড় দিল্লি

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের অনুরোধেও গলল না বরফ। সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Waters Treaty) কার্যত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তেই অনড় রইলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত মাসে কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ…

pakistan pleads for indus waters

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের অনুরোধেও গলল না বরফ। সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Waters Treaty) কার্যত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তেই অনড় রইলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত মাসে কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হানায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের মৃত্যুর পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নেয় ভারত৷ কেন্দ্রের দাবি, পহেলগাঁও হামলার পিছনে ছিল পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত৷ এর পরই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সিন্ধু জল চুক্তিকে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চুক্তিটি ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং তা এতদিন ভারত-পাক জলবণ্টন সম্পর্কের মেরুদণ্ড ছিল।

পাকিস্তানের চিঠি, দিল্লির অচল অবস্থান

সম্প্রতি পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রক ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছে— ভারত যেন চুক্তির ধারায় ফের ফিরে আসে এবং নদীর জলপ্রবাহ আবার পাকিস্তানে পাঠানো শুরু করে। কিন্তু ভারতের জবাব আরও স্পষ্ট ও কড়া। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল বলেন, “সিন্ধু জল চুক্তি ছিল ভরসা ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। কিন্তু পাকিস্তান বিগত কয়েক দশক ধরে সীমান্তে সন্ত্রাস ছড়িয়ে সেই বিশ্বাস চুরমার করে দিয়েছে। এখন আলোচনার একমাত্র বিষয়—সন্ত্রাসের অবসান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রত্যাবর্তন।”

   

মোদীর বার্তা: “রক্ত ও জল একসঙ্গে বইতে পারে না” pakistan pleads for indus waters

পহেলগাঁও হামলার জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারত৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট ও তাৎপর্যপূর্ণ, “রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না। সন্ত্রাস চলবে আর জলও যাবে—তা হবে না। সন্ত্রাস থাকলে আলোচনা নয়, বাণিজ্য নয়, জলও নয়।”

ভারতের তিনস্তরীয় কৌশল: একফোঁটা জলও নয়

জলশক্তিমন্ত্রী সি আর পাটিল জানান, ভারত এখন থেকে একফোঁটা জলও পাকিস্তানে যেতে দেবে না। তিনি বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলি (সিন্ধু, বিতস্তা, চন্দ্রভাগা) থেকে যে জল এতদিন পাকিস্তানে যেত, তা এবার ভারতের কৃষি, শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে।”

জানা গিয়েছে, এই কৌশল বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই অমিত শাহ, সি আর পাটিল, বিদ্যুৎমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও উচ্চপদস্থ আমলাদের নিয়ে অন্তত দুটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত রূপরেখা ঘোষণা করা হবে।

 কী ছিল সিন্ধু জল চুক্তি?

১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত এই ঐতিহাসিক চুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিম ভারতের তিনটি নদী—সিন্ধু, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগা—পাকিস্তানের জন্য সংরক্ষিত ছিল, আর পূর্বাঞ্চলের তিনটি নদী—শতদ্রু, বিয়াস ও ইরাবতী—ভারতের হাতে ছিল।

চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের মাত্র ৩০ শতাংশ জল ব্যবহারের অধিকার ছিল, বাকি ৭০ শতাংশই যেত পাকিস্তানে। এই “উদারতা”র উত্তর পাকিস্তান  বারবার দিয়েছে সন্ত্রাসের মাধ্যমে৷ সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছে ভারত সরকার।

চুক্তি নয়, এবার জাতীয় স্বার্থ আগে

প্রাক্তন কূটনীতিকদের মতে, এটি নিছক একটি চুক্তি স্থগিত নয়—এটি পাকিস্তানকে একটি কূটনৈতিক ও বাস্তব সংকেত। এবার আর প্রতিবাদ বা নিন্দায় নয়, জঙ্গিবাদের জবাব জল দিয়ে, কৌশলে দিচ্ছে ভারত।

দাওয়াত নয়, দমনই একমাত্র পথ

ভারত এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে—”সন্ত্রাসের প্রশ্নে কোনও সমঝোতা নয়। চুক্তি, আলোচনাও নয়। এখন একটাই দাবি—সন্ত্রাস বন্ধ করো, না হলে জলও বন্ধ থাকবে।” এই বার্তা শুধু পাকিস্তান নয়, বিশ্ববাসীকেও বুঝিয়ে দিল— ভারত আর নরম নয়।

 Bharat: India suspends Indus Waters Treaty, halting water flow to Pakistan after Pahalgam terror attack. Modi government твердо stands against sending water amidst continued terrorism. Pakistan’s appeal rejected. Read the latest on India-Pakistan water dispute.