Monday, December 8, 2025
HomeBharatপুঞ্চে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ল্যান্ডমাইন ফাটাল পাক সেনাবাহিনী, পাল্টা ভারতের

পুঞ্চে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ল্যান্ডমাইন ফাটাল পাক সেনাবাহিনী, পাল্টা ভারতের

- Advertisement -

জম্মু ও কাশ্মীর: সীমান্তের ওপার থেকে আবারও উত্তেজনার স্রোত (Pakistan landmine blasts)। গত ৬ ডিসেম্বর রাত থেকে পুঞ্চ জেলার একাধিক সেক্টরে বিশেষত বালাকোট, কৃষ্ণা ঘাটি ও মেন্ধার চলেছে পরপর বিস্ফোরণের শব্দ। ভারতীয় সেনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য: পাকিস্তান সেনা ইচ্ছাকৃতভাবে জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছে, যার ফলে সীমান্তে পুঁতে রাখা বহু ল্যান্ডমাইন একের পর এক বিস্ফোরিত হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়া, সেন্সর সিস্টেমসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত প্রতিরক্ষা অবকাঠামো।

এমন ঘটনা কাশ্মীর সীমান্তে নতুন নয়। তবে এবার উদ্দেশ্য যে শুধু ক্ষতি সাধন নয়, বরং বড়সড় অনুপ্রবেশের পথ তৈরি করা—এমনটাই মনে করছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। কারণ বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার আড়ালে গত তিন দিনে অন্তত তিনটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা নস্যাৎ করেছে ভারতীয় সেনা।

   

স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই তীব্র ছিল যে সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরনোর সাহস পাননি। সেনার স্পেশাল পেট্রোলিং টিম জানিয়েছে, জঙ্গল-পাহাড় মিলিয়ে বিশাল এলাকায় আগুন লাগানো হয়েছে, যা ল্যান্ডমাইন ফাটিয়ে ভারতীয় সেনার নজরদারি ব্যবস্থা ধ্বংস করার একটি পরিকল্পিত কৌশল।

সেনা কর্মকর্তাদের মতে , “ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ মানেই সীমান্তের প্রতিরক্ষা দুর্বল করা। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট জঙ্গিদের গোপনে ঢোকার সুযোগ তৈরি করা।” তিনবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা, তিনবারই ব্যর্থ ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তিন দফায় LOC বরাবর তিনটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিগোষ্ঠী।

কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে সেনা রাতভর গোলাগুলি চালিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করে। মেন্ধার সেক্টরে নৈশ–দৃশ্যমান (night-vision) ড্রোনে ধরা পড়ে দুই সন্ত্রাসীর গতিবিধি। বালাকোট সেক্টরে ট্র্যাকিং ডগ স্কোয়াড জঙ্গিদের তাজা পায়ের ছাপ শনাক্ত করে, এরপর সেনার গুলিবর্ষণে অনুপ্রবেশ ব্যর্থ হয়। সেনা সূত্রের ভাষায় “ফায়ার, বিস্ফোরণ আর অন্ধকার সব মিলিয়ে অনুপ্রবেশের আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছে পাকিস্তান।”

অবস্থার গুরুতরতা বিবেচনা করে ভারতীয় সেনা পুরো সীমান্তজুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছে। আরও ড্রোন মোতায়েন হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে গ্রাউন্ড সেন্সর এবং থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরার সংখ্যা। সেনা কর্তাদের দাবি, পাকিস্তান সেনার এই কর্মকাণ্ড Ceasefire Understanding 2021-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই বিষয়টি DGMO হটলাইনে পাকিস্তানকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে।

বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠেছে পুঞ্চের বহু গ্রাম। কৃষকরা জানিয়েছেন, গরু–মোষ নিয়ে মাঠে যাওয়াই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সীমান্তের কাছে থাকা স্কুলগুলোতেও সতর্কতা জারি হয়েছে। এক গ্রামের শিক্ষিকা বলেন “প্রতিদিন বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাচ্চারা আতঙ্কিত। কোনও দিনই জানি না সকালটা কীভাবে শুরু হবে।”

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সীমান্তক্ষেত্রে বড় ফাঁক তৈরি করা পাকিস্তানের বহু পুরনো কৌশল। তবে এবার বিস্ফোরণের মাত্রা ও আগুন লাগানোর বিস্তৃতি দেখে মনে হচ্ছে সর্দার বা আনাসের মতো জঙ্গি নেটওয়ার্ক পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। এক প্রাক্তন DGMO বলেন, “এই ধরনের বিস্ফোরণ সাধারণত অনুপ্রবেশের আগে করা হয়। পাকিস্তান সেনা যে আবারও সন্ত্রাসবাদের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেছে, তা স্পষ্ট।”

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular