নেপাল থেকে ভারতের একাধিক রাজ্যে পাকিস্তানের অর্থ পাঠানোর (Pakistan Funding) তদন্তের পরিধি যত বাড়ছে, ততই বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমনই জানালেন বিহার পুলিশের শীর্ষ অফিসার ও পুর্নিয়ার এসপি আমির জাভেদ। তার সাংবাদিক সম্মেলনের পর চাঞ্চল্য। তদন্তে উঠে এসেছে, প্রতিবেশি দেশ নেপাল থেকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশায় পাঠানো টাকার পরিমান কমপক্ষে ১০০ কোটি।
বিহার পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, গত এক বছরে পাকিস্তানি হ্যান্ডলাররা নেপাল থেকে ভারতে যত পরিমান টাকা ঢুকিয়েছে তার ৭০ শতাংশই উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে গেছে। ওড়িশার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও টাকা পাঠানো হয়েছে। একশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন ধরা পড়েছে বলে বিহার পুলিশের দাবি।
এমন তথ্যও উঠে এসেছে, পাকিস্তান থেকে অনলাইন মোডের মাধ্যমে নেপালের নেভাল এবং সানরাইজ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা হয়। নেপালের এই ব্যাঙ্কগুলি থেকে টাকা তুলে ভারতীয় এজেন্টরা প্রথমে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় মুদ্রায় ক্যাশ করে নেয়। এরপর পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের নির্দেশে ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম সেন্টারের সিডিএমএ মেশিন থেকে সরাসরি বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায়।
তদন্তে উঠে এসেছে, নেপাল হয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে যে টাকা আসছে তা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করা হচ্ছে। ভারতীয় এজেন্টরা গরিবদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খেলায়। অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু পরিমাণ টাকা তোলা হয় এবং অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে দেওয়া হয়। এরপর এই অ্যাকাউন্ট থেকে বড় অঙ্কের লেনদেন হয়। তদন্তে এই ধরণের অ্যাকাউন্টধারী ধরা পড়ার পরে জানান যে তাকে অ্যাকাউন্ট খুলতে দিয়েছে তার নাম-ঠিকানা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
নেটওয়ার্কের মাস্টার থাকে পাকিস্তানে বলে দাবি করেছেন পুর্ণিয়ার এসপি আমির জাভেদ। তিনি জানান, সম্প্রতি তিন ভারতীয় এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়। তারা পাকিস্তানি এজেন্টদের সাথে লেনদেনে জড়িত। এই কাজের কুমির অন্য কেউ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাকিস্তান থেকে নেপালে এবং নেপাল থেকে ভারতে আসা অর্থের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে জড়িত শতাধিক। বেশিরভাগই ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা। ভারতে টাকা পাঠানোর উদ্দেশ্য আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। বিহার পুলিশের তদন্ত দল বলছে, এটা হাওয়ালার মামলা নয়। নগদ হাওয়ালায় বিতরণ করা হয়। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এনআইএ প্রবেশ করলে সহযোগিতা করবে বলে জানান পুর্নিয়ার পুলিশ সুপার আমির জাভেদ। গ্রেফতারকৃত তিন ভারতীয় এজেন্টকে শিগগিরই রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে জানান এসপি। তিনজন এজেন্টই সেন্ট্রাল জেল পূর্ণিয়ায় বন্দি। এসপি জানান, গ্রেফতারকৃত তিন এজেন্ট এই ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছে। এই ব্যবসার আগে এসব লোকের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। এই লোকেরা নেপালে মটর ব্যবসা করত। এই ব্যবসার সময় এই লোকেরা পাকিস্তানি দালালদের সংস্পর্শে আসে।