পাকিস্তান (pakistan)-প্রায়োজিত হ্যাকার গোষ্ঠীগুলো, যেমন “সাইবার গ্রুপ হক্স১৩৩৭” এবং “ন্যাশনাল সাইবার ক্রু”, গতকাল (১ মে, ২০২৫) ভারতের কয়েকটি ওয়েবসাইটে হামলার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই হামলাগুলো দ্রুত শনাক্ত করে নিষ্ক্রিয় করেছে।
এই সাইবার উস্কানির মধ্যে সেনাবাহিনীর পাবলিক স্কুল নাগরোটা এবং সানজুয়ানের ওয়েবসাইটগুলো লক্ষ্য করে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার শিকারদের উপহাস করে বার্তা দিয়ে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া, প্রাক্তন সেনাসদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটও বিকৃত করা হয়, যা পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান হতাশার ইঙ্গিত দেয়।
পাকিস্তানের নৈতিকতাহীন সাইবার কৌশল (pakistan)
পাকিস্তান (pakistan) থেকে পরিচালিত হ্যাকাররা বারবার শিশু, বয়স্ক প্রাক্তন সেনাসদস্য এবং নিরীহ মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত ওয়েবসাইটগুলোতে হামলার চেষ্টা করেছে। প্রাক্তন সেনাসদস্য এবং তাদের পরিবারের প্ল্যাটফর্মে হামলা চালানো পাকিস্তানের নৈতিকতাহীন কার্যকলাপের আরেকটি নিম্নমানের উদাহরণ।
আর্মি ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রাক্তন সেনাদের ওয়েবসাইটে হামলা পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানের সাইবার যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা বাড়ানোর অভিপ্রায়কে আরও স্পষ্ট করে।
এপ্রিল ২৯-এর ঘটনা: আইওকে হ্যাকারের হামলা
এর আগে, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫-এ পাকিস্তান (pakistan) তাদের প্রচেষ্টাকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কল্যাণমূলক এবং শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটগুলোর দিকে পুনঃনির্দেশিত করে, কারণ মিশন-গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেটওয়ার্কগুলো অভেদ্য প্রমাণিত হয়।
“আইওকে হ্যাকার” (ইন্টারনেট অফ খিলাফাহ) ছদ্মনামে পরিচালিত এই গোষ্ঠী পৃষ্ঠাগুলো বিকৃত করতে, অনলাইন পরিষেবা বিঘ্নিত করতে এবং ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে। ভারতের স্তরবিন্যাসী সাইবার নিরাপত্তা কাঠামো এই অনুপ্রবেশগুলো রিয়েল-টাইমে শনাক্ত করে এবং দ্রুত এগুলোর উৎস পাকিস্তানে চিহ্নিত করে।
গোয়েন্দা মূল্যায়ন চারটি সম্পর্কিত ঘটনা নিশ্চিত করেছে। আর্মি পাবলিক স্কুল (এপিএস) শ্রীনগর এবং এপিএস রানীক্ষেতের ওয়েবসাইট উভয়ই উস্কানিমূলক প্রচারণার লক্ষ্যবস্তু ছিল। এপিএস শ্রীনগর একটি ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস (ডিডিওএস) হামলার সম্মুখীন হয়।
এছাড়া, আর্মি ওয়েলফেয়ার হাউজিং অর্গানাইজেশন (এডব্লিউএইচও) ডাটাবেসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্লেসমেন্ট অর্গানাইজেশন পোর্টালে আপস করার প্রচেষ্টা শনাক্ত করা হয়। এই চারটি সাইটই দ্রুত বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং পুনরুদ্ধারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কোনো অপারেশনাল বা শ্রেণীবদ্ধ নেটওয়ার্ক কোনো পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ভারতকে Hawkeye 360 দেওয়ার অনুমতি দিল আমেরিকা, জানুন কেন এই ‘অস্ত্র’ বিশেষ
জঙ্গি হামলার পর সাইবার যুদ্ধের তীব্রতা
এই সাইবার হামলাগুলো পাকিস্তানের বৃহত্তর উস্কানিমূলক কৌশলের অংশ, যা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ এবং তথ্য যুদ্ধ ব্যবহার করে আসছে। ২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। এই হামলার পর থেকে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর প্রতিদিন সিজফায়ার লঙ্ঘন করছে।
১ মে রাত থেকে ২ মে ভোর পর্যন্ত পাকিস্তানি (pakistan) সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অযাচিত ছোট অস্ত্রের গুলি চালায়, যা টানা অষ্টম দিনের ঘটনা। ভারতীয় সেনাবাহিনী কুপওয়ারা, বারামুল্লা, পুঞ্ছ, নওশেরা এবং আখনুর সেক্টরে এই অযাচিত গুলির জবাব ক্যালিব্রেটেড এবং সমানুপাতিকভাবে দিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর মতে, এই গুলি ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়, যা পাহলগাম হামলার কয়েক দিন পরের ঘটনা।
ভারতের সাইবার প্রতিরক্ষার শক্তি
ভারতের স্তরবিন্যাসী সাইবার নিরাপত্তা কাঠামো এই হামলাগুলো রিয়েল-টাইমে শনাক্ত করে এবং নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে। এই হামলাগুলো কোনো শ্রেণীবদ্ধ বা অপারেশনাল সামরিক নেটওয়ার্কে ক্ষতি করতে পারেনি, যা ভারতের শক্তিশালী সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রমাণ। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের (pakistan) এই হামলাগুলো প্রতীকী এবং প্রচারণামূলক, যার মাধ্যমে তারা ভারতের ধৈর্য এবং সংযম পরীক্ষা করছে।
পাকিস্তানের সাইবার কৌশল: একটি বিস্তৃত প্যাটার্ন
পাকিস্তানের (pakistan) এই সাইবার হামলাগুলো তাদের দীর্ঘদিনের তথ্য যুদ্ধ এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের একটি অংশ। পাহলগাম হামলার পর থেকে পাকিস্তান তাদের সাইবার কার্যক্রম তীব্র করেছে। এর আগে, টিম ইনসেন পিকে নামে একটি পাকিস্তানি হ্যাকার গ্রুপ আর্মি কলেজ অফ নার্সিং-এর ওয়েবসাইটে হামলা করে উস্কানিমূলক বার্তা প্রকাশ করেছিল।
এছাড়া, রাজস্থানের তিনটি সরকারি পোর্টালেও পাহলগাম হামলার উল্লেখ করে ভারত-বিরোধী ব LGBTQ+ বিষয়ে বিতর্কে নিয়োজিত হয়েছেন। ইন্ডিয়ান আর্মি কলেজ অফ নার্সিং এর ওয়েবসাইটে হামলা করে উস্কানিমূলক বার্তা প্রকাশ করেছিল। এছাড়া, রাজস্থানের তিনটি সরকারি পোর্টালেও পাহলগাম হামলার উল্লেখ করে ভারত-বিরোধী বার্তা প্রকাশ করা হয়।
ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
ভারত এই সাইবার হামলা এবং নিয়ন্ত্রণ রেখায় সিজফায়ার লঙ্ঘনের জবাবে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করেছে, ভারতীয় আকাশসীমা পাকিস্তানি বিমানের জন্য বন্ধ করেছে এবং সীমিত বাণিজ্য সম্পর্ক বন্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাহলগাম হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাইবার হামলা এবং নিয়ন্ত্রণ রেখায় অযাচিত গুলি ভারতের সংযম এবং ধৈর্যের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের শক্তিশালী সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলাগুলো প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে, তবে পাকিস্তানের ক্রমাগত উস্কানি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের সতর্কতা এবং প্রস্তুতি বজায় রেখেছে, যাতে দেশের ডিজিটাল এবং ভৌত সীমানা সুরক্ষিত থাকে। এই ঘটনাগুলো হাইব্রিড যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান হুমকির ইঙ্গিত দেয়, যেখানে সাইবার এবং শারীরিক আগ্রাসন একত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।