পাকিস্তানের (pakistan) সামরিক বাহিনী বর্তমানে গুরুতর গোলাবারুদ ঘাটতির মুখোমুখি, যা তাদের যুদ্ধক্ষমতাকে মাত্র চার দিনের জন্য সীমাবদ্ধ করেছে। এই সংকটের মূল কারণ হলো ইউক্রেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক অস্ত্র চুক্তি, যা পাকিস্তানের যুদ্ধ মজুদ প্রায় শূন্য করে দিয়েছে।
সূত্র জানায়, পাকিস্তান (pakistan) অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজ (পিওএফ), যা সামরিক বাহিনীর জন্য গোলাবারুদ সরবরাহ করে, বিশ্বব্যাপী চাহিদার উত্থান এবং পুরনো উৎপাদন সুবিধার কারণে মজুদ পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলস্বরূপ, পাকিস্তানের গোলাবারুদ মজুদ উচ্চ-তীব্রতার সংঘর্ষে মাত্র ৯৬ ঘণ্টা টিকতে পারে, যা তাদের সামরিক বাহিনীকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
পাকিস্তানের সামরিক কৌশল (pakistan)
পাকিস্তানের (pakistan) সামরিক কৌশল ভারতের সংখ্যাগত শ্রেষ্ঠত্ব মোকাবিলায় দ্রুত সংঘবদ্ধকরণ এবং কামান ও সাঁজোয়া ইউনিটের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু তাদের এম১০৯ হাউইৎজারের জন্য ১৫৫ মিমি শেল এবং বিএম-২১ সিস্টেমের জন্য ১২২ মিমি রকেটের অপর্যাপ্ত মজুদ তাদের ভারতীয় আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করেছে। ২০২৫ সালের এপ্রিলে এক্স-এ পোস্টে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের কামান-নির্ভর কৌশলের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ১৫৫ মিমি শেল ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে, যা তাদের মজুদকে বিপজ্জনকভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
পিওএফ প্রাথমিকভাবে দেশীয় চাহিদা মেটানোর জন্য নির্মিত হলেও, ইউক্রেনে ১৫৫ মিমি গোলাবারুদ বিক্রির ফলে তাদের সব ১৫৫ মিমি বন্দুক সিস্টেম, যার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় এবং এমজিএস কামান রয়েছে, পর্যাপ্ত গোলাবারুদ ছাড়াই রয়েছে। এই ঘাটতি পাকিস্তানের সামরিক কৌশলের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। সূত্র জানায়, গোলাবারুদের অভাবে পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব তীব্র উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে, এমনকি কিছুটা আতঙ্কের পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই বিষয়টি ২ মে ২০২৫-এ বিশেষ কর্পস কমান্ডার সম্মেলনে আলোচিত হয়েছে।
কামার জাভেদ বাজওয়া স্বীকার করেছিলেন
পাকিস্তানের (pakistan) সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এর আগে স্বীকার করেছিলেন, পাকিস্তানের গোলাবারুদ এবং অর্থনৈতিক শক্তির অভাবে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার ক্ষমতা নেই। সূত্র জানায়, গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্ভাব্য সংঘর্ষের প্রত্যাশায় পাকিস্তান ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে গোলাবারুদের ডিপো নির্মাণ করেছে। তবে, দূরবর্তী যুদ্ধে গোলাবারুদ পাঠানোর ফলে পাকিস্তানের অস্ত্রাগার শূন্য হয়ে গেছে, যা তাদের প্রতিরক্ষাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
আজ ফাইনালে জামশেদপুরের মুখোমুখি এফসি গোয়া, এক নজরে একাদশ
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট
পাকিস্তানের (pakistan) অর্থনৈতিক সংকট, যা উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং কমে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ দ্বারা চিহ্নিত, সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমকে আরও বাধাগ্রস্ত করেছে। সেনাবাহিনীকে রেশন কমাতে, সামরিক মহড়া স্থগিত করতে এবং জ্বালানি ঘাটতির কারণে নির্ধারিত যুদ্ধ খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের সামরিক প্রস্তুতিকে আরও দুর্বল করেছে।
এদিকে, পাকিস্তান আরেকটি ক্ষেত্রে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। পাকিস্তান-সমর্থিত হ্যাকার গ্রুপ যেমন “সাইবার গ্রুপ হক্স১৩৩৭” এবং “ন্যাশনাল সাইবার ক্রু” ১ মে ভারতীয় ওয়েবসাইটে অনুপ্রবেশের ব্যর্থ চেষ্টা করে। ভারতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই হ্যাকিং প্রচেষ্টাকে দ্রুত চিহ্নিত করে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা
সাম্প্রতিক পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার শিকারদের উপহাস করে আর্মি পাবলিক স্কুল নাগরোটা এবং সানজুয়ানের ওয়েবসাইটে হামলার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া, প্রাক্তন সেনাদের স্বাস্থ্যসেবা সেবার একটি ওয়েবসাইটও ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়, যা পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান হতাশার ইঙ্গিত দেয়।
পাকিস্তানের (pakistan) হ্যাকাররা শিশু, প্রবীণ সেনা সদস্য এবং নিরীহ মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত ভারতীয় ওয়েবসাইটে বারবার হামলার চেষ্টা করেছে। প্রবীণ সেনাদের এবং তাদের পরিবারের প্ল্যাটফর্মে হামলার মাধ্যমে পাকিস্তানের নৈতিকতাহীন কার্যকলাপের আরেকটি নিম্ন পর্যায় প্রকাশ পেয়েছে।
আর্মি ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রবীণদের ওয়েবসাইটে হ্যাকিং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠানের উস্কানি এবং সাইবার যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা বাড়ানোর উদ্দেশ্যকে আরও স্পষ্ট করে।
সাইবার হামলাগুলো পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সন্ত্রাসবাদ
এই সাইবার হামলাগুলো পাকিস্তানের (pakistan) দীর্ঘদিনের সন্ত্রাসবাদ এবং তথ্য যুদ্ধের কৌশলের অংশ। এটি মনে হয়, পাকিস্তান ভারতের ধৈর্য এবং সংযম পরীক্ষা করছে। পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের কঠোর পদক্ষেপ, যার মধ্যে ইন্দুস জল চুক্তি স্থগিত করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা হ্রাস করা রয়েছে, পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সামরিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা তাদের কৌশলগত অবস্থানকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
পাকিস্তানের গোলাবারুদ রপ্তানির সিদ্ধান্ত স্বল্পমেয়াদী আর্থিক লাভের জন্য নেওয়া হলেও, এটি তাদের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা ক্ষমতার উপর গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, ভারতের সামরিক আধুনিকীকরণ এবং গোলাবারুদ মজুদ বৃদ্ধির তুলনায় পাকিস্তানের দুর্বলতা দুই দেশের মধ্যে সামরিক ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট এবং সামরিক প্রস্তুতির ঘাটতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপর নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।