‘পহেলগাঁওয়ের মর্মান্তিক হামলার মাস্টারমাইন্ড মুনির’, বিস্ফোরক দাবি পাক সেনা প্রাক্তনীর

গত ২২ এপ্রিল(munir) জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, যাতে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিল, তা পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ও ফিল্ড মার্শাল…

munir is the mastermind of pahalgam attack

গত ২২ এপ্রিল(munir) জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, যাতে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিল, তা পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের  নেতৃত্বে একটি ষড়যন্ত্র ছিল। এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ জনবিক্ষোভ থেকে দৃষ্টি সরানো এবং মুনিরের ক্ষমতার অবস্থান সুরক্ষিত করা। এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন মেজর আদিল রাজা।

আদিল রাজা জানিয়েছেন

আদিল রাজা জানিয়েছেন, এই হামলার পেছনে আসিম মুনির (munir) ছাড়াও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার থেকে পাঁচজন শীর্ষ কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। তিনি এই হামলার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের নাম, মুখ এবং পদবি প্রকাশ করেছেন। রাজা আরও উল্লেখ করেছেন যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপকে সমর্থন করে এবং পাকিস্তানের মাটি থেকে হ্যান্ডলারদের মাধ্যমে এই ধরনের হিংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

   

এই দাবি ভারতের সেই অভিযোগকে আরও জোরদার করে, যেখানে প্রমাণসহ বলা হয়েছে যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা ভারতে জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী, বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে।

আসিম মুনিরের ভূমিকা এবং উদ্দেশ্য (munir)

আদিল রাজার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল এবং আসিম মুনির (munir) এর মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি জানিয়েছেন, মুনির এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ হিসেবে।

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বারবার ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে মুনির (munir) সেনাবাহিনীর মধ্যে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে একটি বড় ধরনের অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা করেন। রাজা আরও উল্লেখ করেছেন যে সম্প্রতি মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়েছে, যা এই হামলার মাধ্যমে তাঁর ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজা জানান, তিনি জানেন কোন কোন আইএসআই কর্মকর্তা এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন, কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব পিছু হটতে অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, মুনির(munir) এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর জন্য। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বেলুচিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের মতো সমস্যাগুলির মধ্যে মুনির এই হামলার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী আবেগ জাগিয়ে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে চেয়েছিলেন।

জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তারা

আদিল রাজা দুজন পাকিস্তানি কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন, যারা এই হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। প্রথম জন হলেন আইএসআইয়ের ডিজি মোহাম্মদ আসিম মালিক এবং দ্বিতীয় জন হলেন মোহাম্মদ শাহাব আসলাম। রাজার দাবি, শাহাব আসলাম এই হামলায় সবচেয়ে সরাসরি ভূমিকা পালন করেছেন এবং হামলাকারী জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। এই অভিযোগগুলি পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার বিষয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে আরও শক্তিশালী করে।

হামলার পটভূমি

২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসারান উপত্যকায় পাঁচজন সশস্ত্র জঙ্গি হামলা চালায়, যেখানে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই হামলায় প্রধানত হিন্দু পর্যটকদের লক্ষ্য করা হয়, যদিও একজন খ্রিস্টান পর্যটক এবং একজন স্থানীয় মুসলিমও নিহত হন। হামলাকারীরা এম৪ কারবাইন এবং একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে ঘন পাইন বোনে ঘেরা এই পর্যটন স্থানে প্রবেশ করে। এই ঘটনাকে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পর ভারতে বেসামরিক নাগরিকদের উপর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।(munir)

Advertisements

দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ), যিনি পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার একটি শাখা বলে মনে করা হয়, প্রাথমিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তবে পরে তারা এটিকে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ বলে দাবি প্রত্যাহার করে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংযোগ খুঁজে পেয়েছে, যেখানে ডিজিটাল প্রমাণ মুজাফফরাবাদ এবং করাচির নিরাপদ আশ্রয়স্থলের দিকে ইঙ্গিত করে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জানিয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এই হামলা পরিচালিত হয়েছিল।

মিনার্ভা অ্যাকাডেমিকে হারিয়ে এআইএফএফ ট্রফি পাঞ্জাবের

ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট

ভারতের শীর্ষ নেতৃত্ব, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানের ভূমিকাকে ‘অস্বীকার্য’ বলে অভিহিত করেছেন। মোদি বলেছেন, ভারত প্রতিটি জঙ্গি এবং তাদের সমর্থকদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেবে। ভারত ইতিমধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস, ইন্ডাস জল চুক্তি স্থগিত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিলের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে, মুনিরের (munir) ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। প্রাক্তন পেন্টাগন কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন মুনিরকে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তুলনা করে তাঁকে ‘জঙ্গি ’ বলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে মার্চ ২০২৫-এ একটি বিল উত্থাপিত হয়, যেখানে মুনিরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিরোধীদের নিপীড়নের জন্য নিষেধাজ্ঞার দাবি জানানো হয়।

পহেলগাঁও হামলা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আদিল রাজার বিস্ফোরক দাবি পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই-এর জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগকে আরও শক্তিশালী করেছে।

আসিম মুনিরের(munir) নেতৃত্বে এই হামলা কেবল কাশ্মীরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টাই নয়, বরং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে দৃষ্টি সরানোর কৌশল বলে মনে হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে এই হামলার জবাবে কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তবে এটি সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, যাতে মুনিরের অবস্থান আরও শক্তিশালী না হয়।