আমেরিকায় ঘুষকাণ্ডে মোদী ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠীর (Gautam Adani) নাম জড়ানো নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আলোচনা চাইল বিরোধীরা। সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে রবিবার বিরোধী INDIA জোটের তরফে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকেই এ বিষয়ে নিজেদের দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। অধিবেশনে আদানি গোষ্ঠীর বিষয়ে আলোচনা ছাড়াও মণিপুরের অশান্তির প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা চেয়েছেন বিরোধীরা।
আমেরিকার আদালতে সম্প্রতি ‘প্রমাণ-সহ অভিযোগপত্র’ (ইনডিক্টমেন্ট) জমা পড়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপো সাগরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির খবরও প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। ঘুষের মামলায় সমনও জারি হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপো সাগরের বিরুদ্ধে।
নিউ ইয়র্কের আদালতের মাধ্যমে পাঠানো ওই সমনে বলা হয়েছে, আমেরিকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিয়োরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) আনা ঘুষের অভিযোগের জবাব ২১ দিনের মধ্যে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রককে পাঠাতে হবে। গত ২১ নভেম্বর আমদাবাদে দু’জনের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে ওই সমন।
গৌতম আদানি, সাগর এবং আদানি গোষ্ঠীর আরও কিছু আধিকারিকের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিচার বিভাগীয় আদালত এবং আমেরিকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি অভিযোগ করেছে, আদানি গোষ্ঠীর সংস্থা আদানি গ্রিনের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে বিদ্যুতের চড়া দাম-সহ বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়ার জন্য ভারতীয় কিছু সরকারি আমলাকে ২২০০ কোটি টাকা (২৬.৫ কোটি ডলার) ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই সব সুবিধার সুবাদে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২০০ কোটি ডলার মুনাফা করার পরিকল্পনা ছিল সংস্থার। আদানি গোষ্ঠী এবং সংস্থার কর্ণধারের নাম ঘুষকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি এবং তাঁর সহযোগীদের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়েও একাধিক জল্পনা তৈরি হয়েছে। এই আবহে আদানি প্রসঙ্গ নিয়ে কেন্দ্রকে আরও চাপে রাখার কৌশল নিচ্ছে বিরোধী শিবির।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদের বক্তব্য, এই বিষয়টির সঙ্গে দেশের অর্থনীতি জড়িত এবং এটি একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়। সোমবার শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অধিবেশনে বাকি বিরোধী দলগুলিও আদানি প্রসঙ্গ নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সুর মেলাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা আদানিকাণ্ডে যুগ্ম সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি করেন কি না, সে দিকেও নজর থাকবে।
সর্বদল বৈঠকে বিরোধীদের পক্ষে কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি। এর পাশাপাশি দিল্লির দূষণ এবং ঘন ঘন ট্রেন দুর্ঘটনার মতো বিষয়গুলি নিয়েও সংসদে আলোচনা করতে চাইছেন তারা।