পাল পাল ভুয়ো জঙ্গির আত্মসমর্পণ অভিযোগ, বিব্রত বিজেপি, বাম আমলেই সন্ত্রাসবাদ শীতঘুমে

একদা ‘স্বাধীন ত্রিপুরা’ (Tripura) দাবিতে পরপর গণহত্যা সংঘটিত করা দুটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এনএলএফটি (NLFT) এবং এটিটিএফ (ATTF) গোষ্ঠীর ছশো জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি…

Opposition party CPIM alleges that BJP government surrendered more than 500 fake militants in Tripura

একদা ‘স্বাধীন ত্রিপুরা’ (Tripura) দাবিতে পরপর গণহত্যা সংঘটিত করা দুটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এনএলএফটি (NLFT) এবং এটিটিএফ (ATTF) গোষ্ঠীর ছশো জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি (Tripura) ত্রিপুরা সরকারের। বিজেপি শাসিত এ রাজ্য সরকার নাটক করছে বলে অভিযোগ উল্লিখিত দুটি জঙ্গি সংগঠনের প্রাক্তন অনেক সদস্যদেরই। তারা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা (Manik Saha) সবই জানেন। প্রাক্তন জঙ্গিদের অনেকেরই দাবি, ত্রিপুরায় বিগত ২৫ বছরের বামফ্রন্ট জমানায় সশস্ত্র উপজাতি আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়েছিল।

দেশে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত তথ্য দেয় আইপিএস কে পি এস গিল (প্রয়াত) প্রতিষ্ঠিত সাউথ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টাল। কেন্দ্র সরকার এই তথ্য মান্যতা দেয়। এদের প্রকাশিত তথ্য বলছে, নব্বই দশকে উপজাতি সন্ত্রাসবাদে রক্তাক্ত ত্রিপুরায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। বাম আমলের মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকারের কড়া শাসনের জঙ্গিরা শীতঘূমে চলে যায়। ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বাম জমানা পতনের পর বিজেপি শাসনে সশস্ত্র উপজাতি সংগঠনের কিছু সদস্য ফের সক্রিয়।

   

ত্রিপুরায় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ভুয়ো জঙ্গি আত্মসমর্পণ নাটক চলছে অভিযোগে বিজেপি জনজাতি মোর্চার নেতৃবৃন্দের মধ্যেও তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, মেকি জঙ্গি আত্মসমর্পণে রাজ্য সরকার সরকারের শরিকদল তিপ্রা মথার কাছে বশ্যতা স্বীকার করছে। গত লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী দল ছিল তিপ্রা মথা। ভোটের আগে তারা সরকারের শরিক হয়। ফের রাজ্যে বিরোধী দল হয় সিপিআইএম।

বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী জানান, রাজ্যে টানা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কোন জঙ্গি আক্রমণের ঘটনা নেই। হঠাৎ করে কোথা থেকে ৯৮৪ জন সন্ত্রাসবাদী আত্মসমর্পণ করলো সরকারকে জবাব দিতে হবে। তিনি বলেন, এদের পরিচয় কি? কোথা থেকে আসল। কি অস্ত্র জমা দিল। কি শর্তে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার তাদের সঙ্গে আত্মসমর্পণ চুক্তি তৈরি করলো। এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে সরকারকে।

বিরোধী দলনেতা আরও বলেছেন, রাজ্যের জনগণ, বিগত বামফ্রন্ট সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ প্রয়াস এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সার্বিক বিকাশের উদ্যোগ মিলে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গি আত্মসমর্পণের বিষয়ে মু়খ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, ত্রিপুরায় শান্তি বিরাজমান।

সম্প্রতি কেন্দ্র, রাজ্য ও দুটি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে শান্তি চুক্তি হয়। সেই চুক্তির ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৫৮৪ জন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করে। এতে আলোড়িত রাজ্যবাসীর মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, এত সংখ্যক জঙ্গি কোথা থেকে এসেছে। রাজ্য বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, মেকি জঙ্গি আত্মসমর্পণ করাতে পুলিশের কাছে কিছু হেভিওয়েট তদ্বির করেছিল। বিজেপির উপজাতি নেতৃত্ব চরম ক্ষুব্ধ বলে জানা যাচ্ছে।

আগরতলার সংবাদপত্রগুলিতে লেখা হয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আরও প্রায় ছয়শো জঙ্গি আত্মসমর্পণ করবে। যেখানে থাকবে প্রায় ৪০ জন মহিলা। আর বিরোধী দল সিপিআইএমের কটাক্ষ, আরও একপ্রস্থ আত্মসমর্পণ নাটক চলবে।