পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তি, গ্রেফতার সরকারি কর্মী শাকুর খান

জয়সালমেরে এক সরকারি কর্মীকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ দল। ধৃত ব্যক্তির নাম শাকুর…

Govt Employee Shakur Khan Arrested in Rajasthan for Spying for Pakistan’s ISI

জয়সালমেরে এক সরকারি কর্মীকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ দল। ধৃত ব্যক্তির নাম শাকুর খান মাঙ্গানিয়ার। তিনি রাজস্থানের শ্রম ও কর্মসংস্থান দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি দেশজুড়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) পর গুপ্তচর চক্র দমনে তৎপরতা বেড়েছে, তারই অংশ হিসেবে এই গ্রেফতারি বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

সূত্র জানায়, শাকুর খানকে তার অফিস থেকেই গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানের হাই কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্য পাচার করতেন। তার পাকিস্তানে যাওয়ার ইতিহাসও সন্দেহের উদ্রেক করেছে তদন্তকারীদের মধ্যে। জানা গেছে, তিনি গত কয়েক বছরে সাতবার পাকিস্তান সফর করেছেন।

   

শাকুর খানের বাড়ি রাজস্থানের বরোদা গ্রামের ধানি এলাকায়, যা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি। এই অঞ্চলে বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই সীমান্তবর্তী পরিস্থিতির কারণে নিয়মিতভাবে দুই দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, তবে গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, শাকুর খানের পাকিস্তান সফরের পেছনে সামান্য পারিবারিক কারণ ছিল না, বরং এগুলো ছিল পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, শাকুর খানের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার মধ্যে কিছু সন্দেহজনক চ্যাট, কল রেকর্ড ও ইমেইল পাওয়া গেছে, যা তাকে পাকিস্তানের হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ দেয়। এছাড়াও, তার ব্যাংক লেনদেন এবং হাওয়ালা চক্রের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

শাকুর খানকে খুব শীঘ্রই জয়পুরে স্থানান্তর করা হতে পারে, যেখানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজ্য পুলিশের বিশেষ শাখা তার যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তিনি একা নন, তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না, সেটা বের করাও গুরুত্বপূর্ণ। তার ফোন থেকে বেশ কয়েকটি স্থানীয় ও আন্তঃরাজ্য নম্বর পাওয়া গেছে, যেগুলোর সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

‘অপারেশন সিন্দূর’-এর পর গোটা দেশে বিভিন্ন গুপ্তচর চক্র ধরতে একাধিক অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানের অধীনে শুধুমাত্র রাজস্থান নয়, দিল্লি, পাঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্রসহ একাধিক রাজ্যে সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এই ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই শাকুর খানের বিরুদ্ধে অফিস থেকে সাসপেনশন জারি করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হল, দেশের ভিতরে থেকে তথ্য পাচার ও গুপ্তচরের কাজ চালানো এখনও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে দেশবিরোধী শক্তির প্রভাব মোকাবিলায় আরও সতর্কতা ও জনসচেতনতার প্রয়োজন বলেই মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।