জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ (omar abdullah) শনিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে করা মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ইসলামাবাদ থেকে আসা বক্তব্যকে তিনি খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চান না। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া এই হামলায় ২৬ জন, পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহর প্রতিক্রিয়া (omar abdullah)
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহ (omar abdullah) পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “প্রথমে তারা পহেলগাঁওয়ে কিছু ঘটেছে তা স্বীকারই করেনি। তারা বলেছিল, এর পিছনে ভারতের হাত রয়েছে (omar abdullah)। যারা প্রথমে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল, তাদের বক্তব্য নিয়ে এখন কিছু বলা কঠিন। আমি তাদের কথাকে গুরুত্ব দিতে চাই না। যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এমন ঘটনা কখনোই ঘটা উচিত নয়।”
ভারতের দুটি শক্তিশালী ‘ব্রহ্মাস্ত্র’! অর্ডার পেলেই মানচিত্র থেকে মুছে দেবে করাচি-লাহোর
শেহবাজ শরিফ বলেন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শনিবার খাইবার পাখতুনখোয়ার কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির একটি পাসিং-আউট প্যারেডে বক্তৃতা দেন (omar abdullah)। তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি “নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য” তদন্তে অংশ নিতে প্রস্তুত। তিনি পাকিস্তানকে “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের অগ্রগামী দেশ” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা ৯০,০০০ হতাহত এবং ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।”
একদিন আগে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্বীকার করেন যে, তাদের দেশ দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন ও সমর্থন করে এসেছে। স্কাই নিউজের সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তিন দশক ধরে আমরা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের জন্য এই নোংরা কাজ করেছি। এটি একটি ভুল ছিল, এবং আমরা এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, যদি পাকিস্তান সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এবং ৯/১১-এর পর যুদ্ধে যোগ না দিত, তাহলে পাকিস্তানের ইতিহাস নির্মল থাকত। তবে, তিনি ভারতের সঙ্গে “সর্বাত্মক যুদ্ধের” হুঁশিয়ারি দেন।
ভারতের কঠোর পদক্ষেপ
পহেলগাঁও হামলার পর ভারত সরকার বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট (ICP) বন্ধ করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য SAARC ভিসা ছাড় স্কিম (SVES) স্থগিত করা, তাদের ৪০ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং উভয় দেশের হাইকমিশনের কর্মকর্তার সংখ্যা কমিয়ে আনা। এছাড়া, ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে বলেন, “এই হামলার জন্য দায়ী সন্ত্রাসীরা এবং এর ষড়যন্ত্রকারীরা অকল্পনীয় শাস্তির মুখোমুখি হবে। এখন সময় এসেছে সন্ত্রাসবাদের অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করার। ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছাশক্তি এখন জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।”
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
ওমর আবদুল্লাহ হামলার নিন্দা করে বলেন, “এই ধরনের ঘটনা কাশ্মীরের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর। আমরা চাই এই অঞ্চলে পর্যটন ও অর্থনীতি ফিরে আসুক, কিন্তু এমন হামলা আমাদের পিছিয়ে দেয়।” তিনি পাকিস্তানের বক্তব্যের পরিবর্তে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঐক্য ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
পহেলগাঁও হামলা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানের অস্বীকৃতি এবং পরবর্তী তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব ভারতের দ্বারা গুরুত্ব পায়নি। ভারতের কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃঢ় অবস্থান পরিস্থিতির গুরুত্ব নির্দেশ করে। ভবিষ্যতে এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করে, তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক ও দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির উপর।