জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ স্পষ্ট জানিয়েছেন যে বিজেপির সঙ্গে জোটের কোনও পরিকল্পনা তাঁর দলের নেই। এদিন জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার প্রথম বাজেট অধিবেশনে তিনি বলেন, “আমরা বিজেপির সঙ্গে কোনও জোটের কথা বলছি না। এর কোনও প্রয়োজন নেই। আমাদের চিন্তাভাবনা বিজেপির সঙ্গে মেলে না। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই আলাদা। আমরা অধিবেশনে সমস্ত বিষয় নিয়ে বিষয়ে আলোচনা করব।” ভাষণ দেন।
বিধানসভায় ভাষণে ওমর আবদুল্লাহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “মনমোহন সিং অবিভক্ত ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজে পড়াশোনা করে তিনি অর্থমন্ত্রী ও পরে প্রধানমন্ত্রী হন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি যখন দায়িত্ব নেন, দেশ অর্থনৈতিক সংকটে ছিল। তাঁর সময়ে লাইসেন্স রাজ বন্ধ হয়, বেসরকারি খাতের উন্নতি হয়। আজ আমরা বিশ্বের বড় অর্থনীতির একটি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ইন্দিরা আবাস যোজনা, এমজিএনআরইজিএ-র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করেন।”
মনমোহন সিংয়ের বিদায়ী সাংবাদিক সম্মেলনের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, “তিনি বলেছিলেন, ‘ইতিহাস আমাকে সমকালীন সময়ের চেয়ে ভালো বিচার করবে।’ বিশ্বনেতারা তাঁকে সম্মান করতেন।” ওমর একটি ঘটনার উল্লেখ করে মনমোহনের নম্রতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “একবার একটি বিষয়ে তাঁকে চিঠি লিখেছিলাম এবং সেই বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিই। কিন্তু চিঠির কথা উল্লেখ করিনি। তিনি ফোন করে বললেন, ‘এটা ঠিক নয়, তুমি গণমাধ্যমে বিষয়টি তুলেছ।’ আমি বললাম, চিঠির কথা বলিনি। ১৫ মিনিট পর তিনি আবার ফোন করে ক্ষমা চাইলেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েও তাঁর এই নম্রতা অবিশ্বাস্য।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মনমোহন সিং ও প্রাক্তন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে অনেকটা এগিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “মনমোহনের সময় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য চাকরি সৃষ্টি হয়, জগতি টাউনশিপ তৈরি হয়। জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতুর কাজ তাঁর সময় শুরু হয়। বানিহাল পর্যন্ত ট্রেনের উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি, যা তাঁর উদ্যোগেই শুরু হয়েছিল।”
ওমর আবদুল্লাহর এই বক্তব্যে মনমোহন সিংয়ের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি অঙ্গীকার স্পষ্ট। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাঁর দল নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোবে, এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য স্বতন্ত্র পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।