জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ (omar-abdullah) ইসরায়েলের ইরানের উপর সামরিক হামলাকে ‘সম্পূর্ণ অন্যায্য’ বলে নিন্দা করেছেন এবং পশ্চিমী শক্তিগুলির নীরবতার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই হামলার তুলনা রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের সঙ্গে করে বলেন, ইসরায়েলএই হামলা করেছে কোন কারণ ছাড়াই।
আবদুল্লাহ (omar-abdullah) সতর্ক করে বলেন, এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াবে এবং ভারতের উপরও এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, “আমার জানা মতে, ইরান ইসরায়েলকে এই হামলার জন্য কোনো কারণ দেয়নি। ইসরায়েল নিজের ইচ্ছায় এটিকে প্রতিরোধমূলক হামলা বলে একটি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে।
ইসরায়েল ঠিক তাই করেছে, যা রাশিয়া ইউক্রেনে করেছিল।” তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতি অবশ্যই উত্তেজনা বাড়াবে। এটি আমাদের উপর তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলবে। আমাদের জ্বালানি তেলের দাম, শেয়ার বাজার এবং পশ্চিমে যাওয়া ফ্লাইটের উপর এর প্রভাব পড়বে। কিন্তু এর চেয়েও বড় কথা, এটি মানুষের মনোভাবের উপর প্রভাব ফেলবে।”
ইসরায়েলের ‘রাইজিং লায়ন’ অপারেশন (omar-abdullah)
শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল (omar-abdullah) তেহরানে একটি বড় মাপের সামরিক হামলা চালায়, যাকে তারা ‘প্রতিরোধমূলক অপারেশন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় এই হামলাকে ‘খুবই সফল প্রাথমিক আঘাত’ বলে ঘোষণা করেন।
তিনি (omar-abdullah) বলেন, ইসরায়েলের ‘রাইজিং লায়ন’ নামক এই সামরিক অভিযানে ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সুবিধা এবং ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রধান বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করা হয়েছে। নেতানিয়াহু আরও বলেন, “আমরা ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের কেন্দ্রেও আঘাত করেছি।” তিনি এই অভিযানকে ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ দূর করার লক্ষ্যে পরিচালিত বলে বর্ণনা করেন।
নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরান বিশ্বব্যাপী সতর্কতা সত্ত্বেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের কাছে একাধিক পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে ইরান নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরি করেছে(omar-abdullah)।”
তিনি এই পরিস্থিতির তুলনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে করে বলেন, “আশি বছর আগে ইহুদি জাতি নাৎসি শাসনের হলোকাস্টের শিকার হয়েছিল। আজ ইহুদি রাষ্ট্র ইরানি শাসনের পারমাণবিক হলোকাস্টের শিকার হতে অস্বীকার করছে।”
ওমর আবদুল্লাহর নিন্দা ও পশ্চিমী শক্তির নীরবতা
ওমর আবদুল্লাহ (omar-abdullah) পশ্চিমী শক্তিগুলির, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপের, নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “বিশ্বের বড় শক্তিগুলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু ইসরায়েল যখন ইরানের উপর হামলা করে, তখন তারা নীরব থাকে। যদি একটি দেশের অন্য দেশের উপর হামলা অন্যায় হয়, যেমন রাশিয়ার ক্ষেত্রে, তাহলে ইসরায়েলের ইরানের উপর হামলাও সম্পূর্ণ অন্যায্য।” তিনি এটিকে বিশ্ব শক্তিগুলির দ্বিমুখী নীতি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “এই নীরবতা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
আবদুল্লাহ (omar-abdullah) আরও বলেন, এই উত্তেজনা ভারতের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, “এটি আমাদের জ্বালানি তেলের দাম, শেয়ার বাজার এবং পশ্চিমে যাওয়া ফ্লাইটের উপর প্রভাব ফেলবে। তবে এর চেয়েও বেশি, এটি মানুষের মনোভাবের উপর প্রভাব ফেলবে।”
তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ইরানে আটকে থাকা কাশ্মীরি ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “ইরানে আটকে থাকা কাশ্মীরি ছাত্রদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করছি। তাদের পরিবারগুলি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, এবং আমরা এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছি।”
ইরানের প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
ইরানের (omar-abdullah) পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইরান তার স্বার্থ, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা এবং জনগণের প্রতিরক্ষায় কোনো সীমাবদ্ধতা মানবে না। ইরানের রাষ্ট্রসংঘ মিশন দাবি করেছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান মার্কিন-নিয়ন্ত্রিত ইরাকি আকাশসীমা ব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িত। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, “ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে ভুল করেছে এবং ভুল হিসাব করেছে। আমরা ইরানি জাতির শক্তি, সক্ষমতা, উদ্যোগ এবং দৃঢ়তা তাদের বোঝাব।”
ভারতের উপর প্রভাব
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব ফেলবে। ভারত মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায় ৪৪% তেল আমদানি করে, এবং এই সংঘাত তেলের দাম বাড়াতে পারে, যা ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করবে। এছাড়া, পশ্চিমে যাওয়া ফ্লাইটের রুট বন্ধ হতে পারে, যা ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির জন্য সমস্যা তৈরি করবে। মধ্যপ্রাচ্যে ৯০ লক্ষ ভারতীয় প্রবাসী রয়েছেন, যারা এই উত্তেজনার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন।
মিউনিখ বিশ্বকাপে সিফত কৌরের ব্রোঞ্জ, ভারতের শ্যুটিংয়ে গৌরব
ইসরায়েলের ইরানে হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ওমর আবদুল্লাহর বক্তব্য এই সংঘাতের বিশ্বব্যাপী প্রভাব এবং পশ্চিমী শক্তিগুলির দ্বিমুখী নীতির উপর আলোকপাত করেছে। ভারত সরকারকে এই পরিস্থিতিতে সতর্কতার সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।