নয়াদিল্লি: ব্যস্ত সময় হোক বা আপতকালীন পরিস্থিতি, ওলা, উবেরের মত অ্যাপ ক্যাব (App Cab) কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্যে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। প্রয়োজনের সময় অধিকাংশ সময়ই মেলে না ক্যাব। পাওয়া গেলেও অত্যধিক ‘সার্জ’ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছোতে হয়। আবার অনেক সময়ই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ‘রাইড ক্যান্সেল’ করে দেন ক্যাব-চালকরা। যার ‘ক্যান্সেলেশন চার্জ’ যায় যাত্রীর পকেট থেকেই।
কিন্তু এসবের এবার সমাপ্তি হতে চলেছে। জানা গিয়েছে, অ্যাপ ক্যাবের বাজারে আসতে চলেছে কেন্দ্রের সরকারি ট্যাক্সি পরিষেবা, যার নাম ‘ভারত ট্যাক্সি সেবা’ (Bharat Taxi Service)। কেন্দ্রীয় সহযোগিতা মন্ত্রক এবং জাতীয় ই-গভর্নেন্স বিভাগের (NeGD) যৌথ প্রচেষ্টায় যাত্রী পরিষেবার কথা ভেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের মতে, জাতীয় ই-গভর্নেন্স বিভাগ (NeDG) এবং সহকার ট্যাক্সি কোঅপারেটিভ লিমিটেড ‘ভারত ট্যাক্সি’ একটি ‘মৌ-চুক্তিতে’ (MoU) স্বাক্ষর করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল চালকদের তাঁদের আয়ের সম্পূর্ণ মালিকানা প্রদান করা এবং একই সাথে যাত্রীদের একটি নির্ভরযোগ্য এবং সরকার-তদারকি সম্পন্ন পরিষেবা প্রদান করা। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে, সরকার যাত্রীদের একটি নির্ভরযোগ্য, স্বচ্ছ এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প প্রদানের দাবি করছে।
ভারত ট্যাক্সি সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
বেসরকারি ট্যাক্সি সংস্থাদের উপযুক্ত জবাব: গত কয়েক বছর ধরেই অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও, মুনাফার লোভে যাত্রী এবং ড্রাইভারদের একপ্রকার ‘শোষণ’ করে চলেছে ওলা, উবের, ইন ড্রাইভের মত একাধিক অ্যাপ ক্যাব (App Cab) কোম্পানি। যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও, শেষ পর্যন্ত ড্রাইভারের পকেটে ঢুকছে নামমাত্র টাকা। নিজেদের আয়ের প্রায় ২৫% অর্থ কোম্পানিকে দিয়ে দিতে হয় ড্রাইভারদের।
ভারত ট্যাক্সি এই অন্যায্য ব্যবস্থার অবসানের দিকে প্রথম দৃঢ় পদক্ষেপ, বলে জানানো হয়েছে। ‘ভারত ট্যাক্সি সেবা’-য় ড্রাইভারদের থেকে কোনোরকম কমিশন নেওয়া হবে না। ড্রাইভাররা কেবল একটি সাবস্ক্রিপশন ফি প্রদান করে, যা দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক হতে পারে। এইভাবে, প্রতিটি ট্রিপ থেকে সমস্ত আয় ড্রাইভারের পকেটেই থাকবে। যার ফলে লক্ষাধিক ড্রাইভার উপকৃত হবেন। শুধু তাই নয়, এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়া ড্রাইভারদের ‘সারথী’ বলে অভিহিত করা হবে।
সহকার ট্যাক্সি কোঅপারেটিভ লিমিটেড’-এর দায়িত্ব
কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন নয়, বরং একটি কোঅপারেটিভ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই পরিষেবা পরিচালিত হবে। যার সঞ্চালনা করবে ‘সহকারী ট্যাক্সি কোঅপারেটিভ লিমিটেড’। চলতি বছরের জুন মাসেই প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পুঁজি নিয়ে এই ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
দিল্লি থেকে শুরু হবে পরিষেবা, চালু হবে সমগ্র দেশে
জানা গিয়েছে, নভেম্বর মাসেই দিল্লি থেকে ভারত ট্যাক্সির পাইলট প্রোজেক্ট শুরু হবে। ৬৫০ গাড়ি এবং চালক এই পাইলট প্রোজেক্টের অংশ হবেন। যদি এই প্রোজেক্ট সফল হয় তাহলে দেশজুড়েই এই পরিষেবা চালু করা হবে। সূত্রের খবর, প্রথম ধাপেই প্রায় ৫০০০ চালক ভারত ট্যাক্সির সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছেন। ২০৩০-এর মধ্যে লক্ষাধিক ড্রাইভার এই অংশ হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
