বালেশ্বর: বালেশ্বরের ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজের ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় উত্তাল ওড়িশা (Odisha College Harassment Protest)। কলেজে হেনস্থার অভিযোগে কলেজ চত্বরেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী৷ পরে হাসপাতালে মারা যাব ওই ছাত্রী৷ এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে রাজ্য বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাসের আশ্রয় নেয়। ধাক্কাধাক্কি, ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা, পুলিশের লাঠিচার্জ, চিত্র ছিল কার্যত রণক্ষেত্রের মতো।
কি হয়েছিল ঠিক?
২০ বছর বয়সি ছাত্রীটি ফকির মোহন কলেজে বি.এড. কোর্সে পড়তেন। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ নিরুত্তর ছিল।
প্রতিবাদ, অভিযোগ-সব কিছুই বারবার অগ্রাহ্য হওয়ায় চূড়ান্ত মানসিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তিনি।
অবশেষে কলেজ চত্বরেই নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ ভর্তি করা হয় তাঁকে। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রতিবাদ গড়াল রাজপথে
এই মৃত্যুকে ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা’ আখ্যা দিয়ে এদিন ভোর থেকেই বিধানসভার সামনে জড়ো হন প্রতিবাদীরা। একাধিক সংগঠনের সদস্য-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের জমায়েতে মুহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড টপকে এগোনোর চেষ্টা করছেন, আর পুলিশ জলকামান চালাচ্ছে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে।
সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বিক্ষোভকারীদের দাবি, “এই মৃত্যু কোনও আত্মহত্যা নয়, এটা প্রশাসনের চরম গাফিলতির ফল।”
কেন এক ছাত্রী দিনের পর দিন হেনস্তার শিকার হয়েও বিচার পেল না? কেন কলেজ কর্তৃপক্ষ চুপ ছিল?—এই প্রশ্নেই জেরবার ওড়িশা প্রশাসন।
নীরব সরকার, তীব্র প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় এখনও মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। যদিও সূত্রের খবর, সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ভাবছে। অন্যদিকে, জাতীয় মহিলা কমিশন ঘটনাটির রিপোর্ট চেয়েছে।
“ন্যায় চাই”, বলছে পরিবার ও সমাজ
পরিবারের দাবি, “আমার মেয়ের মতো যেন আর কাউকে মরতে না হয়। যারা দোষী, তারা যেন সাজা পায়। যারা চুপ করে থেকেছে, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।” সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভের ঝড়। হ্যাশট্যাগ ঘুরছে, #JusticeForFMCollegeStudent।
এই ঘটনায় ফের একবার সামনে এল, শিক্ষাঙ্গনে যৌন হেনস্তা ও প্রশাসনিক নির্লিপ্ততার ভয়ানক চিত্র। রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, এখন তাকিয়ে সেই দিকেই গোটা রাজ্য।