Matilda Kullu: ফোর্বসের প্রভাবশালীদের তালিকায় ঠাঁই পেলেন ওড়িশার আশাকর্মী মাতিলদা কুল্লু

Odisha ASHA worker Matilda Kullu

News Desk: চলতি বছরে ফোর্বসের (forbs) প্রকাশ করা দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলাদের তালিকায় রয়েছে একটি বড়সড় চমক। কারণ এই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন ওড়িশার (odisha) আদিবাসী আশাকর্মী মাতিলদা কুল্লু (Matilda Kullu)।

Advertisements

বছর ৪৫-এর এই আদিবাসী মহিলাকে অভিনেত্রী রসিকা দুগ্গল, নিউজ অ্যাঙ্কার অরুন্ধতী ভট্টাচার্যের সঙ্গে একই আসনে বসাল ফোর্বস। ফোর্বসের এই স্বীকৃতি এটাই প্রমাণ করে যে, ক্ষেত্রটি যতই ছোট হোক না কেন নিজের মতো করে নিজের কাজটা করে গেলে একদিন গোটা বিশ্বের কাছেই তার স্বীকৃতি মেলে।

১৫ বছর আগে ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার গর্গডবহল গ্রামে আশা কর্মী হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন মাতিলদা। তিনি যখন চাকরি পেয়েছিলেন সে সময় গর্গডবহল গ্রামটি ছিল সম্পূর্ণভাবে কুসংস্কারের চাদরে মোড়া। গোটা গ্রামের মানুষ কালা জাদু, তুকতাকে বিশ্বাস করত। কিন্তু সেই পরিস্থিতি আজ আমূল বদলে দিয়েছেন এই আশা কর্মী। এক সামাজিক অভিশাপ থেকে এই পিছিয়ে পড়া গ্রামকে মুক্ত করতে পেরেছেন তিনি। তবে মাতিলদার এই কাজটা আদৌ সহজ ছিল না। এই কাজ করতে গিয়ে একাধিকবার কঠিন বিপদের সামনেও পড়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও মাতিলদা নিজের লক্ষ্য থেকে কখনও সরে আসেননি।

Odisha ASHA worker Matilda Kullu

Advertisements

মাতিলদা জানিয়েছেন, তিনি যখন চাকরি পেয়েছিলেন তখন ওই গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে কেউ চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যেতে চাইত না। তারা ওঝার কাছে রোগ সারানোর জন্য ছুটত। ছিল জাতপাতের তীব্র লড়াই। তিনি যখন মানুষের সেই অন্ধ বিশ্বাস ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন তখন তাঁকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে হুমকি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই গ্রামে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে মানুষকে আজ অনেকটাই কুসংস্কারের কবল থেকে বের করে আনতে পেরেছেন। এটাই তাঁর চাকরি জীবনের বড় সাফল্য। মানুষের মনের এই অন্ধকার দূর করতে মাতিলদার প্রয়াসকে স্বীকৃতি দিল ফোর্বসের মত আন্তর্জাতিক সংস্থা।

মাতিলদা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর কাজের দায়িত্ব আরও অনেক বেড়েছে। কারণ প্রতিদিন তিনি কমপক্ষে ৫০ টি বাড়িতে গিয়ে মানুষকে করোনা পরীক্ষার কথা, করোনার হাত থেকে বাঁচতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তা বোঝানোর কাজ করেছেন। নিজে আক্রান্ত হতে পারেন, সেই বুঝেও ঝুঁকি নিয়েও তিনি এই কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। এই কঠিন গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য মাতিলদার মত আশা কর্মীরা যে খুব একটা বেশি বেতন পান তা নয়। বরং তাঁদের মাসিক বেতন এতটাই কম যে তা দিয়ে একজন মানুষেরও ভালোভাবে পেট চলতে পারে না। তবে দেশের সরকার এ ধরনের মানুষগুলিকে যথাযথ সম্মান না দিলেও মাতিলদার মতো আশাকর্মীদের গুরুত্ব বুঝতে ভুল করেনি ফোর্বস। সে কারণেই দেশের প্রভাবশালী মহিলাদের মধ্যে মাতিলদাকেও বেছে নেওয়া হল।