অসমের সাংস্কৃতিক আইকন, জনপ্রিয় গায়ক-সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গার্গের হঠাৎ মৃত্যুর রহস্য আরও গভীর হয়ে উঠেছে (Zubin Death)। সিঙ্গাপুরের এক দ্বীপের কাছে সাঁতার কাটতে গিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি)। নয়াদিল্লির সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে ভিসেরা রিপোর্ট পৌঁছে যাওয়ায় তদন্তে নতুন মোড় এসেছে।
এসআইটির প্রধান, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের স্পেশাল ডিরেক্টর জেনারেল মুন্না প্রসাদ গুপ্ত গুয়াহাটিতে শনিবার সাংবাদিকদের জানান, এই রিপোর্টটি গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের একটি কমিটি এটি পরীক্ষা করে চূড়ান্ত পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এসআইটির হাতে তুলে দেবে।
সবচেয়ে বিপজ্জনক নতুন দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন উত্তর কোরিয়ার
জুবিনের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার আগে ভিসেরা স্যাম্পল নয়াদিল্লির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এই পোস্টমর্টেমের পরই ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃতদেহের শেষকৃত্য হয়। প্রথম পোস্টমর্টেম সিঙ্গাপুরে ১৯ সেপ্টেম্বর করা হয়, যাতে ডুবে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু অসমে ফিরে এসে দ্বিতীয় পরীক্ষার ফলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বিষপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে, যা তদন্তকে নতুন দিকে নিয়ে গেছে। গুপ্ত বলেন, “চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব না। বিষপ্রয়োগের খবর নিয়ে আমরা অপেক্ষা করছি।”জুবিন সিঙ্গাপুরে নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে গিয়েছিলেন।
ব্যান্ডমেট শেখর জ্যোতি গোস্বামী অভিযোগ করেছেন, তাঁর ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্তা তাঁকে বিষ খাইয়ে মেরেছে। গোস্বামীর দাবি, জুবিন সাঁতারে দক্ষ ছিলেন, তাই ডুবে মৃত্যু অসম্ভব। এই অভিযোগের ভিত্তিতে এসআইটি হত্যার অভিযোগ আনিয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে গোস্বামী, শর্মা, মহন্তা ছাড়াও জুবিনের খুড়তুতো ভাই এবং ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ সন্দীপন গার্গ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অফিসার নন্দেশ্বর বড়া ও পারেশ বৈশ্য, এবং সহ-গায়িকা অমৃতপ্রভা মহন্তা।
সিঙ্গাপুরের সঙ্গে তদন্তের জটিলতা আরও বেড়েছে। এসআইটি মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স ট্রিটি (এমএলএটি)-এর মাধ্যমে হোম মিনিস্ট্রির সাহায্যে সিসিটিভি ফুটেজ এবং সাক্ষীদের বিবৃতি চেয়েছে। গুপ্ত বলেন, “পুলিশ অনুমতি ছাড়া বিদেশে তদন্ত করতে যেতে পারে না। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস আমাদের অনুরোধ পরীক্ষা করছে। সিঙ্গাপুর পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া এগোনো অসম্ভব।”