ইম্ফল, ২৮ সেপ্টেম্বর: মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব জেলার নীলাকুঠি এলাকায় একটি গোডাউনে মণিপুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (Environment Pollution) এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে ৩০,০০০ কেজিরও বেশি নিষিদ্ধ একক-ব্যবহার প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এই উপকরণের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য রাজ্য সরকারের চলতি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
এই ঘটনা মণিপুরে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রমাণ।ইম্ফল পূর্ব জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এমপিসিবি এবং পুলিশ শনিবার ভোরে নীলাকুঠির একটি গোডাউনে অভিযান চালায়। এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ একক-ব্যবহার প্লাস্টিক, যেমন প্লাস্টিক ব্যাগ, কাপ, প্লেট এবং স্ট্র বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এই উপকরণগুলি ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়মের অধীনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।বাজেয়াপ্ত করা প্লাস্টিকের মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই অভিযানে গোডাউনের মালিককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ সুরক্ষা আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মণিপুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “একক-ব্যবহার প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি মাটি, জল এবং বায়ু দূষণের একটি প্রধান কারণ। আমরা এই ধরনের অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।” তিনি আরও বলেন, জব্দ করা প্লাস্টিকগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য কেন্দ্রে পাঠানো হবে এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা হবে।
এই অভিযানে জড়িত পুলিশ অফিসারদের মতে, গোডাউনটি দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, যা স্থানীয় বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হতো।মণিপুর সরকার ২০১৯ সাল থেকে একক-ব্যবহার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। রাজ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে, যারা নিয়মিত বাজার, দোকান এবং গোডাউনে অভিযান চালাচ্ছে।
ইম্ফলের লোক্তাক হ্রদ এবং অন্যান্য জলাশয়ে প্লাস্টিক দূষণের কারণে জলজ প্রাণী এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই অভিযানকে স্থানীয় পরিবেশবাদীরা স্বাগত জানিয়েছেন। পরিবেশকর্মী থাংজাম বিরেন বলেন, “এই ধরনের অভিযান মণিপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং বিকল্প উপকরণের ব্যবহার প্রচার করা প্রয়োজন।”
নতুন প্রজন্মের Hyundai i20 আসছে, এদেশে টেস্টিংয়ে ধরা দিল
এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নীলাকুঠির একজন বাসিন্দা লাইশ্রাম সিংহ বলেন, “আমরা প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানি, কিন্তু বাজারে এখনো এটি সহজলভ্য। সরকারের আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।” স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ জানিয়েছেন, জৈব-বিকল্প প্লাস্টিকের দাম বেশি হওয়ায় অনেকে সস্তা একক-ব্যবহার প্লাস্টিকের দিকে ঝুঁকছেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার বিকল্প উপকরণের উপর ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।