নাম ভাড়িয়ে হিন্দু মেয়েকে বিয়ে! অসম পুলিশের জালে মুর্শিদাবাদের মইনুর

অসমের শিলচরে শহরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ মইনুর ইসলামকে গ্রেফতার করেছে কাছাড় জেলা পুলিশ। অভিযোগ, মইনুর ইসলাম ‘সজল দাস’ নামে…

Murshidabad youth case in Assam

অসমের শিলচরে শহরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ মইনুর ইসলামকে গ্রেফতার করেছে কাছাড় জেলা পুলিশ। অভিযোগ, মইনুর ইসলাম ‘সজল দাস’ নামে জাল হিন্দু পরিচয় ব্যবহার করে স্থানীয় এক হিন্দু মহিলা চঞ্চলা দাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে বিয়ে করেছিলেন।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয় বাসিন্দারা মইনুরের ভাড়া বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মইনুর ইসলাম (৩২) গত কয়েক মাস ধরে শিলচরের তপোবন নগর এলাকায় ‘সজল দাস’ নামে জাল পরিচয়ে বসবাস করছিলেন। তিনি দরজায় দরজায় গিয়ে প্লাস্টিকের গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রি করতেন।

   

জাল ভোটার আইডি এবং আধার কার্ড ব্যবহার করে তিনি এই এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। চঞ্চলা দাস নামে এক স্থানীয় মহিলার সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, এবং তিনি তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তবে, চঞ্চলা সম্প্রতি জানতে পারেন যে তার স্বামীর প্রকৃত পরিচয় মইনুর ইসলাম, এবং তিনি হিন্দু নন।

এই তথ্য তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে শেয়ার করেন, যার পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে মইনুরের বাড়িতে হামলা চালায়।গত রবিবার, যখন চঞ্চলা মইনুরের ভাড়া বাড়িতে আসেন, তখন স্থানীয়রা তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা মইনুরকে মারধর করে এবং শিলচরে সদর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পুলিশ তদন্তে নেমে মইনুরের কাছ থেকে জাল ভোটার আইডি এবং আধার কার্ড উদ্ধার করে, যেগুলো ‘সজল দাস’ নামে ইস্যু করা হয়েছিল। এছাড়াও, তার প্রকৃত পরিচয় প্রমাণকারী নথিও পাওয়া গেছে। মইনুরের বিরুদ্ধে জাল নথি তৈরি এবং প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখন তদন্ত করছে, এই জাল নথি তৈরির পেছনে কোনো সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত কিনা।

চঞ্চলা দাস স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমি ভেবেছিলাম তিনি হিন্দু, এবং তার নাম সজল দাস। তিনি আমাকে ভালোবাসার নামে প্রতারণা করেছেন। আমি যখন তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারি, তখন আমি প্রতিবেশীদের জানাই।” তবে, পুলিশ এখনও চঞ্চলার পরিচয় প্রকাশ করেনি, তার গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার কারণে।

Advertisements

এই ঘটনার পর স্থানীয় কিছু গোষ্ঠী এটিকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে অভিহিত করেছে, যার মাধ্যমে তারা দাবি করছে যে মুসলিম পুরুষরা হিন্দু মহিলাদের প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করছে। তবে, এই শব্দটি অত্যন্ত বিতর্কিত, এবং অনেকে এটিকে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টির জন্য ব্যবহৃত বলে মনে করেন।

এই ঘটনা সিলচরে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে অতীতে ধর্মীয় সংঘর্ষের ইতিহাস রয়েছে। ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে শিলচরে মন্দিরে গোমাংসের গুজব নিয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছিল, যাতে বহু মানুষ আহত হয়েছিল।

বিশ্বের প্রথম ২ আসন বিশিষ্ট 5th Gen যুদ্ধবিমান প্রদর্শন চিনের

এই ঘটনাও স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যারা এটিকে ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছে। তবে, পুলিশ এই ঘটনার কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ রয়েছে কিনা তা তদন্ত করছে এবং জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।