গেরুয়া রাজ্যে অবৈধ মাদ্রাসা চালিয়ে গ্রেফতার সালিম

illegal-madrasa-shutdown-salim-uddin-arrest-investigation-news

অসম: গেরুয়া শাসিত এক রাজ্যে অবৈধ মাদ্রাসা পরিচালনার অভিযোগ ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। ঘটনাস্থল একটি শান্ত গ্রাম, যেখানে গত কয়েক মাস ধরে সন্দেহজনক যাতায়াত ও শিশুদের অস্বাভাবিক কার্যক্রম নজরে পড়েছিল স্থানীয়দের। অভিযোগ উঠেছিল একটি ব্যক্তিগত বাড়িকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে “ধর্মীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র” বানানো হয়েছে, অথচ এর কোনো বৈধ অনুমোদন নেই।

Advertisements

স্থানীয় মানুষের অসন্তোষ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তাঁদের দাবি, বাড়ির ভেতরে শিশুদের এমন কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল, যা সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষা বা নৈতিক মূল্যবোধের ক্লাসের সঙ্গে মেলে না। বেশ কিছু অভিভাবকও জানান, তারা বুঝতে পারছিলেন না আসলে কী ধরনের পাঠ বা অনুশীলনে শিশুদের যুক্ত করা হচ্ছে।

   

জঙ্গলে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে আন্তঃকার্যক্ষমতা, ভারত-শ্রীলঙ্কার যৌথ সামরিক মহড়া

এই পরিস্থিতিতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে বাজরং দল ঘটনাটির দিকে নজর দেয়। তাদের তরফে দাবি করা হয়, সালিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি নিজের বাড়িকে অবৈধ মাদ্রাসার মতো ব্যবহার করছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সালিম উদ্দিনকে আটক করে এবং পুরো বিষয়টি পুলিশকে জানায়।

এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সালিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বাড়িটি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা মাদ্রাসা হিসেবে চালানোর অনুমতি পায়নি। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল, কারা এর সঙ্গে যুক্ত ছিল, এবং এর পিছনে কোনো সংগঠিত নেটওয়ার্ক ছিল কি না এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাড়িটির ভেতরে কি কি পাওয়া গেছে, তা নিয়ে প্রশাসন এখনো বিস্তারিত প্রকাশ করেনি। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, শিশুরা কিছু শারীরিক অনুশীলন, আবৃত্তি এবং নির্দেশিত কার্যক্রম শিখছিল, যা তাঁদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। কেউ কেউ বলেছেন, “ওরা বলছিল ধর্মীয় পড়াশোনা হচ্ছে, কিন্তু অনেক কিছু দেখেই মনে হচ্ছিল ব্যাপারটা অন্য।”

Advertisements

একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমাদের এলাকায় বহুদিন ধরে শান্তি। হঠাৎ এমন কিছু চোখে পড়ে যায়, যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভয় তৈরি হয়। আমরা শুধু চাইছিলাম, তদন্ত হোক।” অবৈধ মাদ্রাসা সন্দেহে বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনও জানিয়েছে, শিক্ষা সংস্থা খোলার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম, নথি এবং অনুমতি লাগে। ব্যক্তিগত বাড়িতে চলা এমন প্রতিষ্ঠান আইনবিরুদ্ধ। প্রশ্ন উঠছে কীভাবে মাসের পর মাস এই বাড়িটি নজর এড়িয়ে এভাবে চলছিল?

এদিকে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, যদি অভিযোগ সঠিক হয়, তবে শিশুদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয়।

বাচ্চাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও প্রশাসন তাদের আশ্বস্ত করেছে যে ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত হবে এবং সত্য বেরিয়ে আসবে। রাজ্যের শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, কোনো অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের ধর্মীয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো যাবে না তা মাদ্রাসা হোক বা অন্য কিছু।

সালিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ গঠন হবে, তা তদন্তের অগ্রগতির উপর নির্ভর করছে। পুলিশ বলছে, বাড়ির কার্যক্রম, উপস্থিত শিশু, সেখানে পাওয়া সামগ্রী ও সাক্ষ্য সবকিছু মিলিয়ে এই মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন একটাই শিশুদের নিরাপত্তা, তাদের শিক্ষা এবং সমাজের শান্তি বজায় রাখতে প্রশাসন কতটা সচেতন? স্থানীয় মানুষের মতে, এমন ঘটনা আর ফিরে না আসতে হলে নজরদারি, প্রশাসনিক কঠোরতা এবং স্বচ্ছতার দরকার আরও বাড়াতে হবে।