গুয়াহাটি: দীপাবলির উৎসবের আগমুহূর্তে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একটি বিতর্কিত ঘোষণা করে রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, দীপাবলির প্রাক্কালে ‘ঘর সাফাই’ অভিযানের অংশ হিসেবে সাতজন ‘অবাঞ্ছিত উপাদান’ বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে তাদের ‘মূল স্থানে’ ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “যেমনটা বলা হয়, থালা ফর অ্যা রিজন… দীপাবলি দরজায় কড়া নাড়ছে, আমরা আমাদের ঘর পরিষ্কার করেছি এবং সাতটি অবাঞ্ছিত উপাদানকে তাদের উৎসে ফেরত পাঠিয়েছি। এই স্বচ্ছতা অভিযান আগামী দিন ও মাসগুলোতে চলবে। সব অবৈধদের জন্য সময় শেষ।”
জাপান ভ্রমণে সুখবর! ভারতীয় পর্যটকেরা এবার UPI-তে পেমেন্ট করতে পারবেন
হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এই বক্তব্য অসমে দীর্ঘদিন ধরে চলা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বিরোধী অভিযানেরই একটি অংশ। অসমে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান এবং ঐতিহাসিকভাবে অভিবাসনের ইতিহাসের কারণে এই ইস্যু সবসময়ই সংবেদনশীল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অসমে বিগত কয়েক বছরে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত ও ফেরত পাঠানোর জন্য একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে এই প্রক্রিয়া আরও তীব্র হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, এই সাতজন ব্যক্তি অবৈধভাবে অসমে বসবাস করছিলেন এবং তাদেরকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে, তিনি এই ব্যক্তিদের পরিচয় বা তাদের ‘মূল স্থান’ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি, যা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
অসমে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস (এনআরসি) প্রক্রিয়ার পর থেকে এই ইস্যু রাজনৈতিক এজেন্ডার কেন্দ্রে রয়েছে। ২০১৯ সালে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর প্রায় ১৯ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বারবার বলেছেন, অসমের স্থানীয় সংস্কৃতি, ভাষা এবং অর্থনীতিকে অবৈধ অভিবাসনের হাত থেকে রক্ষা করা তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তবে, সমালোচকদের মতে, এই অভিযানগুলো প্রায়ই নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের নেতা বদরুদ্দিন আজমল বলেছেন, “এই ধরনের ঘোষণা অসমের শান্তিকে বিঘ্নিত করে। সরকারের উচিত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযান চালানো, যাতে নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”