গুয়াহাটি, ২৭ অক্টোবর: কর্ণাটকের মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খড়গের মন্তব্য ঘিরে অসমে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। “অসমে শিল্প স্থাপনের মতো মেধাবী ও যোগ্য মানুষ নেই” তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি সরাসরি প্রিয়াঙ্ক খড়গেকে বলেন, “ওই লোকটা প্রথম শ্রেণীর ইডিয়ট।”
হিমন্তর তোপ, “ওই মন্তব্য অসমের যুব সমাজের প্রতি অপমান। কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত এই বক্তব্যের নিন্দা করেনি। আমরা ভাবছি প্রিয়াঙ্ক খড়গের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব, কারণ তিনি বলেছেন অসমে শিক্ষিত যুবক নেই।
ব্লক সভাপতি বিতর্কে কেশপুরে মুখোমুখি রফিক-শিউলি
এটি আমাদের রাজ্যের প্রতিটি যুবকের মর্যাদার প্রতি অপমান।” তিনি আরও বলেন, “কংগ্রেসের এই মন্তব্য তাদের গভীর অহংকার এবং অজ্ঞতার প্রতিফলন। তারা আজও বুঝতে পারেনি যে অসমের তরুণ প্রজন্ম আজ প্রশাসন, উদ্যোগ, শিক্ষা ও উদ্ভাবনে দেশের শীর্ষস্থানে।”
এর আগে দিনদুপুরে বিজেপির রাজ্য কার্যালয় ‘বাজপেয়ী ভবন’-এ এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের মুখপাত্র জয়ন্ত কুমার গোস্বামীও খড়গের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এই মন্তব্য অসমবাসীর আত্মসম্মানে আঘাত করেছে। আমরা কংগ্রেস সভাপতি গৌরব গগৈকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি সাহস থাকলে প্রিয়াঙ্ক খড়গের মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করুন।”
জয়ন্ত গোস্বামী আরও দাবি করেন, “কংগ্রেস পার্টির ইতিহাস অসমকে অপমান করার ইতিহাস। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধে জওহরলাল নেহরুর ‘অসম ছেড়ে পালাও’ মনোভাবই প্রমাণ করে তারা কখনও এই রাজ্যকে গুরুত্ব দেয়নি। ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় ৪০ লক্ষ অবৈধ অভিবাসীর আগমন ঘটেছিল, যার প্রভাব আজও রাজ্য বহন করছে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন রাজীব গান্ধীর সময়ের অসম চুক্তির ১৯৭১ সালের কাট-অফ তারিখ, যা স্থানীয় নাগরিকদের অধিকারে বড় ধাক্কা দেয়। একইসঙ্গে তিনি রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র মানচিত্র বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
জয়ন্ত গোস্বামীর কথায়, “এই ধারাবাহিক অসম্মানের ধারাবাহিকতাই এখন প্রিয়াঙ্ক খড়গের মন্তব্যে আবারও স্পষ্ট। কংগ্রেস আজও অসমের মর্যাদা ও সম্ভাবনাকে হালকাভাবে নেয়।” এদিকে বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, আজকের অসমের যুবসমাজ শিক্ষায়, প্রশাসনে, প্রযুক্তিতে ও উদ্যোগে সারা ভারতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে রাজ্য আগামী দিনে আরও আত্মনির্ভর, উদ্ভাবনী এবং শিল্পবান্ধব হবে। অসমের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বিতর্ক আগামী দিনগুলিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির একটি বড় প্রচার অস্ত্র হতে চলেছে। বিশেষ করে যুব ভোটারদের মধ্যে এই ইস্যু ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।


