রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট সফরে গিয়ে অসমের (Assam Government) করিমগঞ্জের প্রাকৃতিক শোভা দেখে লিখেছিলেন, “মমতা বিহীন কালস্রোতে বাংলার রাষ্ট্রসীমা হতে নির্বাসিতা তুমি, সুন্দরী শ্রীভূমি।” ২০২৪ সালে রবীন্দ্রনাথকে সম্মান জানিয়ে অসমের প্রধানমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা করিমগঞ্জের নাম বদলে রাখেন শ্রীভূমি। নাম পরিবর্তনে স্বভাবতই খুশি হন করিমগঞ্জের মানুষ।
এই নাম পরিবর্তনের ঠিক দশমাস পর থেকেই শুরু হয় আচমকা প্রতিবাদ। রবীন্দ্রনাথকে সম্মান দেওয়া যাবে না। রাখতে হবে পুরোনো নাম। এই স্লোগানেই প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন স্থানীয় মানুষ। রাজ্য সরকার অভিযোগ করে এই প্রতিবাদ কংগ্রেসের ইন্ধনেই হয়েছে। শুধু তাই নয় সরকারের অভিযোগ কংগ্রেসের সাথে জুটি বেঁধেছে বামেরাও।
প্রযুক্তিবিদ সুদীপ গুহ বলেন যারা প্রতিবাদে মুখর তারা বলুক করিমগঞ্জ কোন করিমের নামে। তিনি মুর্শিদাবাদের উদাহরণ দিয়ে বলেন মুর্শিদাবাদ শশাঙ্কের কর্ণ সুবর্ণ। ঠিক তার হাজার বছর পর মুর্শিদকুলি খাঁ এর নাম এই জায়গার নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় মুর্শিদাবাদ। তিনি আরও বলেন বাংলার মানুষও তৈরী থাকুক এখানেও অনেক জায়গার নাম পরিবর্তন করা হবে।
লেখক মানস ভট্টাচার্য বলেন রবীন্দ্রনাথ শ্রীভূমি না দিয়েছিলেন ১৯১৯ সালে। কিন্তু অসম, শ্রীভূমির নামের উল্লেখ মহাভারতেও আছে। পরবর্তীকালে যারা ভারত আক্রমণ করেছে দুর্ভাগ্যবশত সেই অত্যাচারী শাসকেরাই নিজেদের নামে জায়গার নাম দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে করিমুল্লা নামে এক জমিদারের নামে এই জায়গার নাম হয় করিমগঞ্জ।
কিন্তু স্বাধীন ভারতে তো জমিদারী প্রথা উঠে গিয়েছে। তাহলে কেন করিমগঞ্জের নাম পরিবর্তন হয়ে রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নাম রাখা হবেনা। এই ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ সমালোচক মহল। তারা বলেছে ভারতবর্ষে এখনো অনেক জায়গা আছে যে জায়গাগুলির নাম বিদেশী শাসকদের নামে। বখতিয়ারপুর থেকে ক্যানিং। আবার কলকাতার ক্যানিং স্ট্রিট থেকে বর্ধমানের কার্জন গেট।
এই জায়গাগুলি নিয়ে কেন কোনো প্রতিবাদ নেই ? কেন শুধুমাত্র নিশানায় রবীন্দ্রনাথ। করিমগঞ্জের নাম পরিবর্তন নিয়ে বেশ কয়েকদিন আগে মৌলবাদীরাও প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মুসলিম উচ্ছেদ অভিযান।
প্রিমিয়ামে জিএসটি মুকুব, বড় ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলছে জীবন বীমা কোম্পানি
তাদের মতে এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়েছে ইন্ডি জোট। বাম কংগ্রেস কংগ্রেস জুটির ইন্ধন এই প্রতিবাদকে নতুন মাত্রা দিয়ে অসমের ভোটব্যাংকে প্রভাব ফেলতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।